জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আত্মপ্রকাশ করা তরুণদের রাজনৈতিক দল **জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)**কে ঘিরে রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। একাধিক রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক ও আলোচনায় প্রাথমিক অগ্রগতি হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে এখনো কিছুটা সময় লাগবে। আলোচনার ফল ইতিবাচক হলে মাসখানেকের মধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা ও ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এনসিপির সঙ্গে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে মূলত দুটি এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়েছে—কিছু দল এনসিপিতে একীভূত হওয়ার বিষয় বিবেচনা করছে, আর অন্যরা ইস্যুভিত্তিক জোট গঠনের পথে হাঁটার কথা ভাবছে। আলোচনায় অগ্রগতি হলে এই এজেন্ডা আরও বিস্তৃত হয়ে নির্বাচনি কৌশল নিয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।
গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও আপ বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে এনসিপির একাধিক বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে একীভূত হওয়া কিংবা জোটবদ্ধভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়। বেশ কয়েকটি দল এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এনসিপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, জুলাইয়ের পক্ষের দল ও সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ চলছে। একীভূত হওয়া সম্ভব না হলে অন্তত ইস্যুভিত্তিক জোট গঠনের মাধ্যমে সামনে এগোনোর পরিকল্পনা রয়েছে। মাসখানেকের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে জুলাই সনদ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে চলমান আলোচনা শিগগিরই শেষ হওয়ার কথা। সনদ কার্যকর হলে এবং এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনা আরও ত্বরান্বিত হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপি ইসলামপন্থী বলয়ে না গিয়ে মধ্যপন্থি একটি নতুন জোট গঠনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। একই সঙ্গে অন্যান্য দল থেকে আগ্রহী নেতাদের দলে টানার চেষ্টা চলছে। সব মিলিয়ে এনসিপির নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের বাইরে একটি বিকল্প বলয় গড়ে উঠতে পারে।