বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বহুদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পাকিস্তানের ইসলামি চিন্তাবিদ, আলেমেদ্বীন ও দাঈ মুফতি তারিক মাসউদ হাফিজাহুল্লাহ ৯ দিনের দাওয়াতি সফরে বাংলাদেশে পা এসেছেন । গতকাল ২৩ জুলাই বাংলাদেশ সফরে এসেই নিজের উস্তাদ মুফতী শহীদুল্লাহ সাহেবের সাথে দেখা করতে জামেয়া রশীদিয়াতে ছুটে যান। উল্লেখ্য যে জামেয়া রশীদিয়া ফেনীর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা মুফতী শহীদুল্লাহ দা.বা. দীর্ঘদিন পাকিস্তানের দারুল ইফতা ওয়াল এরশাদ নাজেমাবাদ,করাচি (বর্তমান জামেয়াতুর রশীদ) এ শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। উনার সেই সময়কার হাতেগড়া কয়েকজন বিখ্যাত আলেমের একজন মুফতী তারিক মাসউদ হাফিজাহুল্লাহ।
আজ ২৪ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার থেকে তার আনুষ্ঠানিক সফরসূচি শুরু হচ্ছে, যা চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে আয়োজিত হচ্ছে তার বিশেষ ইসলামী আলোচনা, সেমিনার ও মাহফিল। তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে সব বয়সী ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে এই সফর ঘিরে দেখা দিয়েছে গভীর আগ্রহ ও উদ্দীপনা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে তিনি প্রথম বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এ। বিকেল শেষে রাত ৯টায় রাজধানীর ওয়ারির মসজিদুন নূরে অনুষ্ঠিত হবে তার দ্বিতীয় দিনের মাহফিল। এভাবেই ধারাবাহিকভাবে তিনি আগামী এক সপ্তাহব্যাপী ঢাকা, কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন শহরে গুরুত্বপূর্ণ দাওয়াতি অনুষ্ঠানগুলোতে বক্তব্য দেবেন।
সফরের দ্বিতীয় দিনে, ২৫ জুলাই শুক্রবার দুপুরে তিনি বক্তব্য দেবেন রাজধানীর বনশ্রী এলাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডি ব্লক সেন্ট্রাল মসজিদে এবং সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে মিরপুরের ইনসাফ ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে। ২৬ জুলাই শনিবার তিনি উপস্থিত হবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এবং বিকেলে বক্তব্য দেবেন নয়া পল্টনের জনাকি কনভেনশন হলে।
২৯ জুলাই কক্সবাজারে একটি ফিকহ সেমিনারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে তার দাওয়াতি সফরের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে। এরপর ৩০ জুলাই তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মৌলভীবাজার সদরে বক্তব্য রাখবেন। সফরের শেষ দিন ৩১ জুলাই তিনি রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে অংশ নেবেন এক বিশাল আয়োজনের মাধ্যমে।
এই সফরের আয়োজকদের মধ্যে রয়েছেন হিশামুর রহমান তালহা, মোসাররফ হোসাইন মাহমুদ, খালিদ সাইফুল্লাহ আইউবি এবং ‘মারকাজুল ফুরকান এডুকেশন ফ্যামিলি’। তাদের প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, এই সফরকে কেন্দ্র করে প্রতিটি স্থানে তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। নিরাপত্তা, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, স্টেজ নির্মাণ, সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থাসহ প্রতিটি দিকেই রয়েছে পরিকল্পিত মনোযোগ।
মুফতি তারিক মাসউদ, যিনি সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তার প্রাঞ্জল উপস্থাপন, হাদীস-ভিত্তিক গভীর বিশ্লেষণ, তরুণবান্ধব দাওয়াতি ভাষা এবং চিন্তাশীল ইসলামি আলোচনার মাধ্যমে—এবার বাংলাদেশে এসেও তুলবেন একইরকম আলোড়ন, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সফরসূচির পোস্টার ও সময়সূচি। ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে তৈরি হয়েছে আলোচনার ঢেউ। অনেকেই লিখেছেন, “এটা শুধু এক বক্তার সফর নয়, বরং ইসলামী চেতনার নবজাগরণ।”
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, যারা একদিকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, অন্যদিকে ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী—তাদের মধ্যে মুফতি তারিক মাসউদের বার্তা পৌঁছাতে পারে নতুন প্রেরণার রূপে।