আওয়ামী লীগের নির্বাচন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক ও আইনি সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল বলে মতামত দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। এটি কেবলমাত্র সরকার বা আদালতের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্ধারিত হতে পারে।চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন,
“যদি সরকার কোনো দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করে, আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারব না। এটি রাজনৈতিক বা আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।”
সিইসি নাসির উদ্দিন আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তারা নির্বাচনে অংশ নেবে কি নেবে না, সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। জোর করে কাউকে নির্বাচনে আনানোর ক্ষমতা আমাদের নেই।”
তার মতে, নির্বাচন কমিশন কেবল সংবিধান ও প্রচলিত আইনের ভিত্তিতেই কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, “এটি একটি রাজনৈতিক বা আইনি সিদ্ধান্ত, আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব। এ বিষয়ে আদালত বা সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।”
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৭ বছর করার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে সিইসি বলেন, “সংবিধানে ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ বছর নির্ধারিত আছে। যদি সংবিধান পরিবর্তন করে ১৭ বছর করা হয়, আমরা সেভাবে কাজ করব। আমাদের দায়িত্ব সংবিধান মেনে চলা।”
তিনি আরও বলেন, “এবার আর আগের মতো নির্বাচন হবে না। আমরা চেষ্টা করব ১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের মতো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে।”
আরো পড়ুনঃ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে: আসিফ মাহমুদ
সংখ্যানুপাতিক ভোটের নিয়ম চালুর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, “এটি এখনো সংবিধানে সংযোজিত হয়নি। সংবিধান সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করবে, সরকার সেগুলো অনুমোদন দিলে আমরা সেভাবে নির্বাচন পরিচালনা করব।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো বছরের পর বছর নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছে। তাদের প্রধান দাবি ছিল সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। আমরা সেটিই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।”
নির্বাচনী ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চাই, যা জনগণের আস্থার প্রতীক হয়ে থাকবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি-দাওয়ার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়া আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।”
নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া রাজনৈতিক ও আইনি সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়টি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত, এবং সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালন করবে। সংখ্যানুপাতিক ভোট, বয়স পরিবর্তনসহ অন্যান্য প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কার্যকর হলে, কমিশন তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবে।
Leave a Reply