এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা যে ভবিষ্যতের কথা কল্পনা করেছিলেন, তা বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রযুক্তি এখন পরীক্ষামূলক পর্যায় পেরিয়ে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েভ ইনক., জাপানের স্পেস পাওয়ার টেকনোলজিস এবং নিউজিল্যান্ডের এমরড-এর মতো কোম্পানিগুলো মাইক্রোওয়েভ ও লেজার-ভিত্তিক শক্তি সংক্রমণ এবং মহাকাশ থেকে সৌরশক্তি প্রেরণের মতো উদ্ভাবনী পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে।
ইতিমধ্যে নিউজিল্যান্ডে এমরড তারবিহীন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে, যা দুর্গম অঞ্চলে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া, বৈদ্যুতিক যানবাহনের (ইভি) জন্য তারবিহীন চার্জিং ব্যবস্থা এবং রাস্তার নিচে চার্জিং প্রযুক্তির উন্নয়নও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে, যা ইভি ব্যবহারে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।
তবে, এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। জনসাধারণের মধ্যে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় থাকলেও প্রযুক্তির দক্ষতা ও ব্যয় একটি বড় বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এরপরও ক্যালটেক ও পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান তারবিহীন বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইন্ডাকটিভ চার্জিং, মহাকাশ-ভিত্তিক সৌরশক্তি এবং রেকটেনা-চালিত বিদ্যুৎ গ্রিড প্রযুক্তি টেসলার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে সহায়ক হবে।
সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এই প্রযুক্তি প্রচলিত বিদ্যুৎ গ্রিডের সীমাবদ্ধতা দূর করে শিল্পখাতের চেহারা বদলে দিতে পারে এবং টেকসই শক্তির এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। এমন এক সময় আসতে পারে, যখন বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কোনো তার বা প্লাগের প্রয়োজনই থাকবে না—শুধু সুইচ অন করলেই মিলবে শক্তি!
সূত্র: ক্যালটেক, টেনেসি টেক ও পপুলার মেকানিক্স