যুক্তরাষ্ট্রের ৫০% শুল্কে ভারতের সুরাটের হীরার শিল্পে সংকট, লাখো শ্রমিকের জীবিকা বিপন্ন - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
রাকসু নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন আজ, পরশু ভোটগ্রহণ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কুবি শাখার নেতৃত্বে মাসুম–সাইদুল সড়ক সংস্কার ও রেলপথ চালুর দাবিতে উপাচার্য বরাবর ইবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি প্রদান গাছের সুরক্ষায় গ্রীন ভয়েস সদস্যদের হাতে পাঁচ প্রকার সামগ্রী প্রদান করলেন অধ্যক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি আবেদন শুরু ২৯ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল সেবার সময় রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়ানো হলো রাবিতে নবীনবরণ: শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা বাস্তবায়নে যুক্তি ও শৃঙ্খলার আহ্বান উপাচার্যের জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০% শুল্কে ভারতের সুরাটের হীরার শিল্পে সংকট, লাখো শ্রমিকের জীবিকা বিপন্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ৮২ বার দেখা হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের আগস্ট থেকে ভারতেরর ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা দেশের বৃহত্তম হীরার কাটিং ও পালিশ শিল্পে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। গুজরাতের সুরাট শহরের ছোট-বড় প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক এই শিল্পে কাজ করেন। শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করতে শুরু করেছেন, ফলে বহু কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে এবং শ্রমিকদের বেতন কমছে, যা জীবিকা সংকট সৃষ্টি করেছে।

৩৫ বছর বয়সী কালপেশ প্যাটেলের সুরাটের আট বছরের পুরনো হীরার কাটিং ইউনিট বন্ধ হওয়ার মুখে। তিনি বলেন, “আমরা এখনও কিছু অর্ডার শেষ করার চেষ্টা করবো, কিন্তু শুল্কের কারণে অনেক অর্ডার বাতিল হচ্ছে। এমন চললে ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে না।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ভারত থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেন। পরে আগস্টে আরও ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হয়। ট্রাম্প এই অতিরিক্ত শুল্ক ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করার ‘দণ্ড’ হিসেবে আরোপ করেছেন।

গুজরাতের হীরার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রমেশ জিলরিয়া জানিয়েছেন, গত দুই বছরে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অন্তত ৮০ জন শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন। বেতন অর্ধেক কমে মাসে প্রায় ১৫,০০০ থেকে ১৭,০০০ রুপির মধ্যে নেমে এসেছে, যা বাড়তি মুল্যস্ফীতির মুখে পরিবার চালানো কঠিন করে তুলেছে।

বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অন্য অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মাঝেও এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব হীরার শিল্পকে এক নতুন সংকটে ঠেলে দিয়েছে।

ভারতের হীরার প্রধান সংগঠন জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (GJEPC) জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের কাটিং ও পালিশ করা হীরার রপ্তানি কমে $১৩.২ বিলিয়ন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৬.৭৫ শতাংশ কম।

শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছেন। কলকাতার ডিম্পল শাহ বলছেন, “আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খারাপ সময় চলছে। মার্কিন ক্রেতারা উচ্চ শুল্কের কারণে পণ্য গ্রহণ করতে অস্বীকার করছেন।”

শুধু আমদানি শুল্ক নয়, ল্যাব-গ্রোন (কারখানায় তৈরি) হীরার বাজার বেড়ে উঠার ফলে প্রাকৃতিক হীরার চাহিদাও কমছে। ল্যাব-গ্রোন হীরা প্রাকৃতিক হীরার দশভাগের এক ভাগ মূল্যের হওয়ায় ক্রেতারা সস্তা বিকল্পের দিকে ঝুঁকছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, দেশীয় বাজারকে শক্তিশালী করে এবং নতুন বাজার অন্বেষণ করেই এই সংকট মোকাবেলা সম্ভব। উত্তর প্রদেশের বরানসির নারায়ণ দাস সরাফ জুয়েলারির পরিচালক রাধা কৃষ্ণ আগরওয়াল বলেন, “দেশীয় বাজার বড়ালে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং অর্থনীতি উন্নত হবে।”

সুরাট জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি অমিত করাত বলেন, “সোনার মতো দেশের ভিতরে বাজার থাকলে, হীরাও সংকট সামলাতে পারবে।”

তবে এই সংকট থেকে উত্তরণ না হলে, ভারতীয় হীরার শিল্পে “দ্যুতি” হারানোয় বিলম্ব হবে না।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT