ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গ্রিনল্যান্ডকে ঘিরে নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ডেনমার্কের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ডিআর জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্তত তিন মার্কিন নাগরিক গোপনে গ্রিনল্যান্ডে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো স্থানীয় সমাজে প্রবেশ করে দ্বীপটিকে ডেনমার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার পক্ষে প্রচার চালানো। তবে তারা নিজস্ব উদ্যোগে নাকি কারও নির্দেশে এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
অভিযোগ প্রকাশের পর ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন কোপেনহেগেনে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মার্ক স্ট্রো-কে তলব করেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ডেনমার্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বর্তমানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত না থাকায় স্ট্রো-ই সেখানে সর্বোচ্চ পদস্থ কূটনীতিক হিসেবে এই ডাকে সাড়া দেন।
ডেনিশ গোয়েন্দা সংস্থা পিইটি সতর্ক করে বলেছে, গ্রিনল্যান্ডকে বিভিন্ন ধরনের প্রভাব বিস্তারের প্রচারণার লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে। বাস্তব বা মনগড়া দ্বন্দ্ব উসকে দিয়ে এবং ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে স্থানীয় সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা হতে পারে বলে তাদের ধারণা। এজন্য গ্রিনল্যান্ডে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স অভিযোগ করেছেন, ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডে যথেষ্ট বিনিয়োগ করছে না। তবে ডেনমার্ক স্পষ্ট জানিয়েছে, স্বশাসিত এই দ্বীপের উপর তাদের সার্বভৌম অধিকার অক্ষুণ্ন থাকবে। কয়েক মাস আগে ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডরিকসনও ঘোষণা করেছিলেন, কোনো দেশের ভূখণ্ড অন্য দেশ দখল করতে পারে না।
গ্রিনল্যান্ডকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ দীর্ঘদিনের। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার প্রকাশ্যে দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা জানিয়েছেন। এমনকি প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনাও তিনি নাকচ করেননি। ফলে গ্রিনল্যান্ডকে ঘিরে ওয়াশিংটন ও কোপেনহেগেনের দ্বন্দ্ব নতুন করে প্রকট হয়ে উঠছে।