
থানচি টুরিস্ট গাইড কল্যাণ সমবায় সমিতি লিমিটেডসহ পর্যটননির্ভর বিভিন্ন পেশাজীবীর প্রতিনিধি দল নাফাকুমসহ থানচির সব দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে পৃথক দু’টি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চলমান কর্মসূচি ‘কর্মবিরতি ও মানববন্ধন’–এর অংশ হিসেবে তারা এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রতিনিধিদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটননির্ভর পুরো থানচি অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা পাহাড়, নদী, নাফাকুমসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের জন্য আগ্রহী থাকলেও নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় সবাই আটকে রয়েছেন। এ অবস্থায় পরিবার–পরিজন নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন স্থানীয় গাইড, নৌকার মাঝি, হোটেল–রেস্টুরেন্ট মালিক, গাড়িচালক–চালকসহ হাজারো মানুষ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, থানচিতে বর্তমানে পরিবেশ শান্ত এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রশাসনের পূর্বের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তিন্দু মুখ পর্যন্ত পর্যটকদের চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও নাফাখুমসহ অন্যান্য স্পটে এখনো নিষেধাজ্ঞা বহাল। প্রতিনিধি দল জানায়, দীর্ঘদিন পর্যটন বন্ধ থাকায় পরিবার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে এবং শিক্ষা, চিকিৎসা, দৈনন্দিন ব্যয়সহ সবকিছুই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পর্যটক গাইডরা জানান, গাইডিংই তাদের মূল জীবিকা। পর্যটন বন্ধ থাকায় পুরো আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
নৌকা মাঝিরা বলেন, নদীপথে পর্যটক পরিবহন বন্ধ হওয়ায় তাদের একমাত্র আয়ের উৎস থমকে আছে, অথচ নৌকা রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
গাড়ি/জিপ চালকরা জানান, কোন যাত্রী না থাকায় গাড়ির কিস্তি ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
হোটেল–রিসোর্ট মালিকরা জানান, দীর্ঘদিন রুম খালি থাকায় ব্যবসা টিকে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে; কর্মচারীদের বেতন পর্যন্ত দিতে পারছেন না।
স্মারকলিপিতে প্রতিনিধি দল জানায়, পর্যটন বন্ধ থাকায় বহু পরিবার শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। তরুণদের বেকারত্ব বাড়ছে এবং সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরও বলা হয়, মৌখিক আলোচনায় বারবার আশ্বাস মিললেও কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। পর্যটনের ভরা মৌসুম শুরু হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে নাফাকুমসহ সব স্থান খুলে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।