মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা যখন চরমে, ঠিক তখনই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সরাসরি আমেরিকা ও ইসরায়েলের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন—ইরানি জাতি কখনও চাপের মুখে আত্মসমর্পণ করেনি, করবেও না। বরং তারা যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দেবে সম্মান ও শক্তি নিয়ে।
ইসরায়েলি সাম্প্রতিক হামলাকে তিনি ‘মূর্খতা ও কপটতার চূড়ান্ত উদাহরণ’ উল্লেখ করে বলেন, “এই জাতি শান্তি হোক বা যুদ্ধ—দুই ক্ষেত্রেই চাপের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ায়। আমেরিকার উচিত হবে ইরানকে ভয় দেখানো বন্ধ করা, কারণ ইরান আত্মসমর্পণযোগ্য কোনো জাতি নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমেরিকার সামরিক হস্তক্ষেপ হলে, তা তাদের জন্য একটি ভয়াবহ ও অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।” ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যারা ইরান ও তার ইতিহাস জানে, তারা হুমকির ভাষায় কথা বলেন না। কারণ এই জাতি মাথা নত করে না, শুধু মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে জানে।”
খামেনি তার ভাষণে কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, “তোমরা দুর্বল হয়ো না, দুঃখ করো না; যদি তোমরা মুমিন হও, তবে তোমরাই বিজয়ী হবে।” (সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৩৯)
তিনি সম্প্রতি ইরানে অনুষ্ঠিত বিশাল র্যালি, জুমার নামাজ পরবর্তী সমাবেশ ও এক নারী উপস্থাপিকার ‘তাকবির’ উচ্চারণকে জাতির ঐক্য ও ঈমানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “এই জাতি ও সশস্ত্র বাহিনী যে কঠোর প্রতিশোধ নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতের জন্য যা প্রস্তুত রেখেছে, তা এক ভয়াবহ বার্তা যা ইহুদিবাদী শত্রুকে দুর্বল করে দিয়েছে।”
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “ইসরায়েল বড় একটি ভুল করেছে, এবং তাদেরকে এই ভুলের ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে। আমেরিকার সরাসরি সহযোগিতা ছাড়া এমন হামলা সম্ভব নয়, এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের বক্তব্য এই সন্দেহ আরও জোরালো করছে।”
শেষে তিনি আহ্বান জানান, বিশ্বব্যাপী চিন্তাবিদ, লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা যেন ইরানের সত্য অবস্থান তুলে ধরেন এবং শত্রুর মিথ্যাচার ও প্রচারণাকে প্রতিহত করেন।