নানা হতাশা ও অপ্রাপ্তিকেন্দ্রিক দোলাচল থেকে উদ্ভূত রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র সাত মাসের মাথায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর অন্তর্বতীকালীন সরকারের কিছু অভাবনীয় সাফল্য নজর কেড়েছে দেশবাসীর। বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিস্থিতিতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রথমত, অন্তর্বতীকালীন সরকার গত ৬ মাসে দেশী-বিদেশী ঋণ পরিশোধ করেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এছাড়া, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে ১৮.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ বিলিয়ন বেশি। এই প্রবাহ দেশের অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করছে।
দেশের রিজার্ভও বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১৪০ কোটি টাকা, যা দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। খাদ্যপণ্যে ভর্তুকি বেড়ে প্রায় ১২ শতাংশ হয়েছে, এবং রমজানে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কাকে ইন্টেরিম সরকার সফলভাবে মোকাবেলা করেছে।
অন্যদিকে, গত ফেব্রুয়ারিতে দেশের মুদ্রাস্ফীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা গত ২২ মাসের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। ধর্ষণের তদন্ত ১৫ দিন এবং বিচার ৯০ দিনের মধ্যে করার সিদ্ধান্তও সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
এছাড়া, ফিফা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, যা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ৪ দিনের বাংলাদেশ সফরও সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাড়াবে।
অনেকে মনে করছেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারের এত সাফল্যের পরও বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল যে বার বার নির্বাচনের কথা বলছেন সেটি যতটা না তাদের বাস্তবিক চাওয়া তার চেয়ে বেশি পলিটিক্যাল এক্টিভিজমের অংশ। কারণ হাসিনা সরকারের রেখে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামলাতে কোনোভাবে ব্যর্থ হলে তা দলীয় সরকারের ইমেজের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই বিবেচনায় এসব স্পর্শকাতর দায়িত্ব অন্তর্বতীকালীন সরকার আদায় করে ফেললে তা তাদের অনুকূলই হবে।