আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে আরও একবার বাংলাদেশের গর্বের প্রতীক হয়ে উঠলেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। চলমান এজবাস্টন টেস্টে (ভারত বনাম ইংল্যান্ড) মাঠের আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অসাধারণ আম্পায়ারিংয়ের নজির স্থাপন করেছেন তিনি। তার প্রতিটি সিদ্ধান্তেই ছিল আত্মবিশ্বাস আর নিখুঁত পর্যবেক্ষণের ছাপ।
এই টেস্টে আম্পায়ার সৈকতের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মোট ১০ বার রিভিউ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৮টিতেই সিদ্ধান্তটি সঠিক প্রমাণিত হয়, যা তার আম্পায়ারিং দক্ষতা, সাহসিকতা এবং ক্রিকেটীয় বিচক্ষণতার অনন্য উদাহরণ। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের ৪১তম ওভারে ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকসের আউটের সিদ্ধান্তটি ছিল সবচেয়ে আলোচিত। ওভারের সময় ভারতীয় বোলার ওয়াশিংটন সুন্দরের একটি এলবিডব্লিউ আপিলে কোনো ধরনের দ্বিধা ছাড়াই আউট ঘোষণা করেন সৈকত। খালি চোখে অনেকের কাছে অনিশ্চিত মনে হলেও রিভিউতে সিদ্ধান্তটি একেবারেই সঠিক প্রমাণিত হয় এবং স্টোকসের রিভিউ নষ্ট হয়। সেই মুহূর্তে মাঠে সৈকতের দৃঢ়তা আর আত্মবিশ্বাস ছিল অনবদ্য।
তার এমন দৃষ্টিনন্দন আম্পায়ারিংয়ে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বখ্যাত ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “এই ম্যাচে আম্পায়ারিং ছিল অসাধারণ। আপনি ক্রিস গ্যাফেনির কাছ থেকে সর্বোচ্চ মানের আম্পায়ারিং আশা করবেনই, কিন্তু শরফুদ্দৌলা সৈকত ছিলেন সত্যিই দুর্দান্ত।”
ম্যাচ চলাকালীন এবং শেষ হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসার বন্যা বইছে। ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্লেষক—সবার মুখে এখন সৈকতের নাম। অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন আত্মবিশ্বাসী, সাহসী এবং আন্তর্জাতিক মানের আম্পায়ার আমাদের সত্যিকারের গর্ব।
উল্লেখ্য, শরফুদ্দৌলা সৈকত বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র আইসিসি এলিট প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার। তার আগেও তিনি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তবে এবারের এজবাস্টনে তার পারফরম্যান্স যেন বাংলাদেশের আম্পায়ারিং ইতিহাসে আরও একটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা অধ্যায় হয়ে থাকবে। ক্রিকেটবিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে তার এই সাফল্য শুধু দেশ নয়, গোটা জাতির গর্ব।