বাংলাদেশে নির্মিত হতে যাচ্ছে সৌদি সরকারের রাজকীয় অনুদানে ৮টি আইকনিক মসজিদ। এ প্রকল্পে সৌদি আরব ২৪৪ কোটি টাকা দেবে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ড. আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ। রোববার (২৭ জুলাই) সচিবালয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই আর্থিক সহায়তার কথা জানান তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে ধর্ম উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবের অর্থায়নে মসজিদ নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিভাগ থেকে জমি সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পাওয়া গেছে। বাকি জায়গাগুলোর ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে। এসব মসজিদ শুধু ধর্মীয় উপাসনার স্থান হিসেবে নয়, বরং দৃষ্টিনন্দন ও স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন হিসেবেও গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, “সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রায় ৩২ লাখ বাংলাদেশি সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন। তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। একই সঙ্গে তারা সৌদি সরকারের ভিশন-২০৩০ বাস্তবায়নেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।” তিনি সৌদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের অনুদান দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।
সাক্ষাৎকালে হজ ব্যবস্থাপনা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। ধর্ম উপদেষ্টা এবারের সুন্দর, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি সরকার ও তাদের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি আগামী বছরের হজ ব্যবস্থাপনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে মিনা, আরাফা ও মুজদালিফায় ওয়াশরুমের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, মিনার তাঁবুতে বিছানার সাইজ বাড়ানো ইত্যাদি।
রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ এসব পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন বলে জানান এবং বিষয়গুলো তার দেশের সরকার ও হজ মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিতে সৌদি সরকার আগের চেয়েও বেশি সহযোগিতা করবে।
এই সময় আরও আলোচনা হয় হজযাত্রীদের লাগেজ ট্র্যাকিংয়ে আরএফআইডি প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়, ঢাকায় আরবী ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ের ওপর।
সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক এবং হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক।