রাশিয়া বুধবার ঘোষণা করেছে, তারা হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের ভয়েস কলের ওপর নতুন সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। মস্কোর ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ জোরদারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়বে হোয়াটসঅ্যাপের প্রায় ৯ কোটি ৬০ লাখ এবং টেলিগ্রামের ৮ কোটি ৯০ লাখের বেশি মাসিক ব্যবহারকারীর ওপর।
রাশিয়ার গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকমনাদজর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও বহু নাগরিকের অভিযোগ অনুযায়ী বিদেশি মেসেঞ্জার অ্যাপ দুটি প্রতারণা, চাঁদাবাজি এবং রুশ নাগরিকদের ধ্বংসাত্মক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত করার প্রধান ভয়েস সেবা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সংস্থাটি অভিযোগ করে, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ বহুবার জানানো হলেও এসব মেসেঞ্জারের মালিকরা তা উপেক্ষা করেছেন।
মস্কো চায়, এসব অনলাইন মেসেজিং সেবা রাশিয়ার আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে ব্যবহারকারীর ডেটায় প্রবেশাধিকার দিক। রসকমনাদজর জানায়, বিদেশি মেসেঞ্জারের কল সেবা তখনই পুনর্বহাল হবে, যখন তারা রুশ আইন মেনে চলা শুরু করবে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে কেবল ভয়েস কল সীমিত করা হয়েছে, অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন যে ভিডিও কলও ব্যাহত হচ্ছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়া দেশে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ বাড়াচ্ছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দাবি করছে, ইউক্রেন টেলিগ্রামের মাধ্যমে রাশিয়ায় লোক নিয়োগ বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। গত মাসে রুশ সরকার একটি আইন পাস করেছে, যেখানে কর্তৃপক্ষের মতে অবৈধ কোনো কনটেন্ট অনলাইনে খোঁজার জন্যও ব্যবহারকারীদের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পরিকল্পনা রয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং সেবাগুলো প্রতিস্থাপন করে ‘ম্যাক্স’ নামের একটি দেশীয় অ্যাপ চালুর, যা সমালোচকদের মতে কর্তৃপক্ষকে সহজেই ব্যবহারকারীর ডেটায় প্রবেশাধিকার দেবে।
হোয়াটসঅ্যাপের এক মুখপাত্র বলেছেন, এই এনক্রিপটেড মেসেজিং অ্যাপ মানুষের নিরাপদ যোগাযোগের অধিকারে হস্তক্ষেপের সরকারি প্রচেষ্টা অমান্য করে, আর এ কারণেই রাশিয়া এটি ১০ কোটিরও বেশি রুশ নাগরিকের জন্য বন্ধ করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, এএফপিকে পাঠানো এক বিবৃতিতে টেলিগ্রাম জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন নাশকতা, সহিংসতার আহ্বান ও প্রতারণাসহ প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার সক্রিয়ভাবে দমন করে এবং লাখ লাখ ক্ষতিকর কনটেন্ট সরিয়ে দেয়।
রুশ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা পাভেল দুরোভের তৈরি টেলিগ্রামকে দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অপরাধীদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছে।