রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় একসময়ের ইমাম মাহদী দাবিদার নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে পদ্মার মোড়ে পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। এ সময় তার বাড়ি ও আশপাশে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
চুরি হওয়া একটি জেনারেটরসহ মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামে এক যুবককে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন থেকে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও গোয়ালন্দ থানা পুলিশের যৌথ টিম গ্রেপ্তার করে। তিনি সদর উপজেলার লক্ষীকোল সোনাকান্দর গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।
এর আগে নুরাল পাগলের ভক্ত নিহত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে সোমবার রাতে অজ্ঞাত ৩ হাজার ৫০০–৪ হাজার জনকে আসামি করে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি ও জখমের অভিযোগে গোয়ালন্দ থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া গত শুক্রবার রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৩ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ উপজেলা আনসার ক্লাব চত্বরে বিপুল জনতা সমবেত হয়ে নুরাল পাগলের আস্তানা ও মাজারে হামলা চালায়। তারা পুলিশের দুটি গাড়ি ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করে এবং মাজারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় নুরাল পাগলের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ইট-পাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ৫০ জন আহত হন। উত্তেজিত জনতা পরে কবর থেকে নুরাল পাগলের লাশ উত্তোলন করে পদ্মার মোড়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় তার ভক্ত রাসেল মোল্লাকে পিটিয়ে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ আগস্ট নুরাল পাগল মারা গেলে তার পরিবার নিজ বাড়ির সামনে প্রায় ১২ ফুট উঁচু একটি কাঠামোর ভেতরে তাকে দাফন করে। পরে ওই কবর কাঠামোকে কাবা শরিফের আদলে রঙ করা হয় এবং ‘হযরত ইমাম মাহদী (আ.) দরবার শরীফ’ লেখা ব্যানার টাঙানো হয়। এতে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়, যা শেষ পর্যন্ত ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়।