প্রথম আলোর শব্দচাতুরী - ‘নির্দেশ’ কে ‘অনুমতি’ বানিয়ে ইতিহাস বিকৃতি! - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস হাসিনার ফাঁসির রায়ে শেকৃবিতে মিষ্টিমুখ ও আনন্দ মিছিল নষ্ট মোবাইল দান কর্মসূচিতে বেকার যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ সৌদি আরব বলেছে, “স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র” ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রশিবিরের মিছিল হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে প্রতিক্রিয়া: ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে দাবি হেফাজতে ইসলামের কুবিতে আইইএলটিএস প্রস্তুতি বিষয়ক ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত কুবিতে প্রোগ্রামিং ও সমস্যা সমাধান কর্মশালা অনুষ্ঠিত বুটেক্স হলগুলোতে মশার ভয়াবহ উপদ্রব, ডেঙ্গুতে বহু শিক্ষার্থী আক্রান্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘Allama Iqbal’s Theory of Khudi’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত

প্রথম আলোর শব্দচাতুরী – ‘নির্দেশ’ কে ‘অনুমতি’ বানিয়ে ইতিহাস বিকৃতি!

খোলা কলাম
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৩০২ বার দেখা হয়েছে
প্রথম আলোর ক্যাপশন, বর্ণণা, নিউজ সব স্থানে লেখা অনুমোদন

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সালের  জুলাই আগস্টের সেই দিনগুলো ছিল বিভীষিকাময়। তৎকালীণ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে ভয়াবহ রক্তপাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার দলিল-প্রমাণ বারবার সামনে এসেছে। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ির ঘটনায় বিবিসি’র সেই ঐতিহাসিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অডিও রেকর্ডিং স্পষ্ট করে বলেছিল, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই ‘নির্দেশ’ শব্দটি ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চূড়ান্ত এবং নির্মম প্রয়োগের প্রতিচ্ছবি।

কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো সেই ভয়াবহ সত্যকে আড়াল করতে নানাভাবে শব্দের মারপ্যাঁচে লিপ্ত। তারা বিবিসি’র অডিও রেফারেন্সের কথা উল্লেখ করে নিজেদের প্রতিবেদনে লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী নাকি ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি’ দিয়েছিলেন।

এ যেন ইতিহাসের নির্মম সত্যের জায়গায় অনুকম্পার শব্দ প্রয়োগ!

দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা কোনো পক্ষাবলম্বন নয়, সত্য তুলে ধরা। অথচ দেশের সবচেয়ে প্রচারিত দৈনিক যখন সরকার-ঘনিষ্ঠ ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রকৃত ‘নির্দেশ’ শব্দটিকে ‘অনুমতি’ বানিয়ে দেয়, তখন এটি শুধু সংবাদ বিকৃতি নয়, বরং ইতিহাস বিকৃতির নামান্তর। একথা সবাই জানে — ‘নির্দেশ’ মানে আদেশ, বাধ্যতামূলক, তৎক্ষণাৎ কার্যকর। আর ‘অনুমতি’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, করা যাবে কি না — এমন অনুমোদন। এর মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

বিবিসি’র অডিওতে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল। আর প্রথম আলো সেই ভয়ংকর বাস্তবতাকে লঘু করে ‘অনুমতি’ শব্দ বসিয়ে ঘটনা আড়াল করতে চেয়েছে। এভাবে সংবাদপত্র ইতিহাস বিকৃতি করলে সেটি সাংবাদিকতার নয়, বরং তোষামোদের দলিল হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নির্লিপ্ত থেকেছে। আর এখন ‘শব্দচাতুরী’ করে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম ঘটনার ভয়াবহতা লঘু করার চেষ্টা করছে।

দেশবাসীর এটা জানার অধিকার আছে — কে কী নির্দেশ দিয়েছিল, কবে দিয়েছিল এবং তার ফল কী হয়েছিল। আর গণমাধ্যমের দায়িত্ব হলো সেটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা, তোষামোদ করা নয়।

প্রথম আলোর এই আচরণ সাংবাদিকতার চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ‘অনুমতি’ আর ‘নির্দেশ’ এর পার্থক্য বোঝার মত ভাষাজ্ঞান কি তাদের নেই? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে এ অপপ্রয়াস?

‘সাবাস বাংলাদেশ’ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায় — ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করুন। বিবিসি’র অডিওতে যা বলা হয়েছিল, সেটিই সত্য। আর সেই সত্যের নাম ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’

দেশবাসীর কাছে আমরা অনুরোধ করবো, এমন শব্দচাতুরীর সংবাদ এড়িয়ে চলুন। ইতিহাস বিকৃতিকারীদের চিহ্নিত করুন।

রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার শব্দ বিকৃতি কখনো সাংবাদিকতার দায়িত্ব হতে পারে না।

সাবাস বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে এই বিকৃত সংবাদ প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT