আল-ওবেইদ ‘ফিলিস্তিনি ফুটবলের পেলে’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন এবং দেশের ফুটবল অঙ্গনের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনি জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় সুলেইমান আল-ওবেইদ নিহত হয়েছেন।
প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দক্ষিণ গাজার একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালালে ৪১ বছর বয়সী আল-ওবেইদ নিহত হন। ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের নামানুসারে তাকে বলা হতো “ফিলিস্তিনি ফুটবলের পেলে”।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে গাজার এই তারকা খেলোয়াড় ১০০টিরও বেশি গোল করেছেন, যা তাকে ফিলিস্তিনি ফুটবলের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত করেছে। পিএফএ এক বিবৃতিতে জানায়—“জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় এবং খাদামাত আল-শাতি দলের তারকা সুলেইমান আল-ওবেইদ বুধবার দক্ষিণ গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর হামলায় শহীদ হয়েছেন।”
পিএফএর হিসাবে, আল-ওবেইদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে গাজায় নিহত ক্রীড়াবিদ ও তাদের পরিবারের সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬৬২-এ। এর মধ্যে ফুটবল অঙ্গনের নিহতের সংখ্যা ৩২১—যার মধ্যে খেলোয়াড়, কোচ, প্রশাসক, রেফারি ও ক্লাব কর্মকর্তা রয়েছেন।
গাজায় খাদামাত আল-শাতি ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন আল-ওবেইদ। পরে তিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরে আল-আমারি ইয়ুথ সেন্টার ক্লাবে যোগ দেন। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ২৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এবং দুটি গোল করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ছিল ২০১০ ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিপক্ষে তার এক চমৎকার সিজর-কিক গোল। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রেখে গেছেন।
বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে গত মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ১,৩০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু বুধবারই ত্রাণ সংগ্রহের সময় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্রে আল জাজিরাকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ জন শিশু। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৭-এ। অধিকাংশ মৃত্যু ঘটেছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে।