দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ: পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতা বনাম ভারতের কৌশলগত দ্বন্দ্ব - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
রাকসু নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন আজ, পরশু ভোটগ্রহণ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কুবি শাখার নেতৃত্বে মাসুম–সাইদুল সড়ক সংস্কার ও রেলপথ চালুর দাবিতে উপাচার্য বরাবর ইবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি প্রদান গাছের সুরক্ষায় গ্রীন ভয়েস সদস্যদের হাতে পাঁচ প্রকার সামগ্রী প্রদান করলেন অধ্যক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি আবেদন শুরু ২৯ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল সেবার সময় রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়ানো হলো রাবিতে নবীনবরণ: শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা বাস্তবায়নে যুক্তি ও শৃঙ্খলার আহ্বান উপাচার্যের জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ: পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতা বনাম ভারতের কৌশলগত দ্বন্দ্ব

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫
  • ৭৯ বার দেখা হয়েছে

০৬ আগস্ট ২০২৫

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন এবং পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত এই নতুন বাস্তবতার সূচনা করেছে।

তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের এই উষ্ণতা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, সে বিষয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। অনেকেই বলছেন, যেন পাকিস্তান চীনের প্রভাব থেকে সরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে। তবে বাস্তবে চীনই এখনো ইসলামাবাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক অংশীদার।

বিশেষ করে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) পাকিস্তানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। উন্নয়ন সহযোগিতার দিক থেকে বেইজিংয়ের প্রতি পাকিস্তানের নির্ভরতা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

এদিকে, ভারতের বর্তমান সরকার হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানবিরোধী অবস্থান আরও কঠোর করছে। এর ফলে ইসলামাবাদ নিরাপত্তা সংকটে পড়ছে এবং পারমাণবিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের জন্য কিছু কৌশলগত সুযোগ তৈরি করেছে। তবে এটি কোনো সরল জিরো সাম গেম নয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে স্পষ্ট বিভাজনের প্রবণতা থাকলেও চীন তুলনামূলকভাবে বাস্তববাদী অবস্থান নেয়, যেখানে উন্নয়ন এবং বাণিজ্য প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত।

চীনের মানবাধিকার ইস্যুতে পশ্চিমা দুনিয়ার সমালোচনা থাকলেও, মাত্র চার দশকে ৮০০ মিলিয়নের বেশি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার অভূতপূর্ব অর্জন বিশ্বে এক অনন্য নজির। অন্যদিকে, গাজায় চলমান সংঘাতে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর নীরব ভূমিকা তাদের নৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

পাকিস্তান ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়—তার মধ্যে শান্তির নোবেল পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়া এবং ২০২১ সালের কাবুল হামলার এক সন্দেহভাজনকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর উল্লেখযোগ্য। এতে ট্রাম্পের ‘শক্তিশালী নেতা’ ইমেজ আরও সুদৃঢ় হয়।

অপরদিকে, চীনকে প্রতিরোধ করতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর ভরসা করছে। ভারত যুক্তরাষ্ট্রনেতৃত্বাধীন কোয়াড জোটের সদস্য, পাশাপাশি চীন-রাশিয়া নেতৃত্বাধীন ব্রিকস জোটেও সক্রিয়। এই দ্বৈত ভূমিকাই ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টি করছে।

কাশ্মীরে হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের প্রতিক্রিয়া ও পাকিস্তানকে দায়ী করে পাল্টা হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানায়। পাকিস্তান দ্রুত সাড়া দিলেও, ভারতের কিছু পদক্ষেপ ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।

বিশেষত, মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল এবং ট্রাম্পের অনুরোধ উপেক্ষা করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়াকে ট্রাম্প বিশ্বাসভঙ্গ হিসেবে দেখেন। এতে দু’দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি বাড়ে।

মূল সমস্যা হলো, ভারত ব্রিকসের মাধ্যমে বিকল্প বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরিতে যুক্ত, যা ডলারের আধিপত্যে হুমকি সৃষ্টি করছে। এই কারণেই ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে কৌশলগতভাবে চাপে রাখার চেষ্টা করেছে—কখনো সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষ, কখনো বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করে।

যদি ভারত এই চাপের কাছে নতি স্বীকার করে, পাকিস্তানের লাভ সাময়িক হবে। আর যদি ভারত যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব এড়িয়ে চলে, তবে পাকিস্তানের জন্য এই ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি কার্যকর ও লাভজনক অবস্থান তৈরি করতে পারে।

সূত্র: দ্য ডন

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT