নির্দিষ্ট কয়েকজন করদাতা ছাড়া দেশের সব ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আগামীকাল সোমবার থেকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে চার ধরণের করদাতার ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা শিথিল রাখা হয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ জারি করা হয়। আদেশে স্বাক্ষর করেছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
আদেশে বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ৩২৮ এর উপ-ধারা (৪) এর ক্ষমতাবলে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এর আওতায় ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা (যাদের সনদপত্র আছে), বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি ব্যতীত বাকি সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের জন্য অনলাইনে (www.etaxnbr.gov.bd) আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ণ দাখিল সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ
তবে প্রবীণ করদাতা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধিরা ইচ্ছা করলে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন, যা তাদের জন্য শিথিলতা হিসেবে ধরা হয়েছে।
যারা স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা হলেও ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধনজনিত কোনো সমস্যার কারণে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন না, তাদের জন্য একটি সুযোগ রাখা হয়েছে। এই ধরনের করদাতারা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে যথাযথ কারণ উল্লেখ করে আবেদন করতে পারবেন। এরপর সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত বা যুগ্ম কর কমিশনারের অনুমোদনের ভিত্তিতে তারা কাগজভিত্তিক রিটার্ন দাখিলের সুযোগ পাবেন।
এর আগেও অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে করদাতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গিয়েছিল। গত করবর্ষে নির্দিষ্ট এলাকার আওতাধীন ব্যক্তি করদাতা, দেশের সব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলে ১৭ লাখের বেশি করদাতা এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
বর্তমানে করদাতারা বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদসহ নানা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে ঘরে বসেই সহজেই আয়কর পরিশোধ ও রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সময় যদি কোনো জটিলতা বা সমস্যা হয়, তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য এনবিআর কল সেন্টারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত দেশের কর ব্যবস্থা আধুনিক ও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে, যা করদাতাদের জন্য সুবিধাজনক এবং সরকারের রাজস্ব আহরণের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী ৪ আগস্ট থেকে কার্যকর এই নির্দেশনা করদাতাদের জন্য এক নতুন দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।