তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই চারদিকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সংসদ এলাকায় নিজের বাসা ছেড়ে পাশের একটি বাসায় আশ্রয় নেন তিনি। তবে সেই বাসাতেও হামলা হয়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, তিনি ও তার স্ত্রী বাথরুমে গিয়ে লুকান।
কাদের বলেন, আন্দোলনকারীরা বাসায় ঢুকে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। এমনকি বাথরুমের ভেতরের কমোড ও বেসিনও ছাড়েনি। তখন তার স্ত্রী মুখে বলছিলেন, তিনি অসুস্থ, যেন ভেতরে না ঢোকে। কিন্তু একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে দরজা খুলে দিলে, সাত-আটজন তরুণ বাথরুমে ঢোকে। তারা প্রথমে আক্রমণাত্মক থাকলেও পরে আচমকাই আচরণ পাল্টে ছবি তুলতে ও সেলফি নিতে শুরু করে। কাদের বলেন, তারা হয়তো তাকে চিনে ফেলেছিল, তাই মনোভাব বদলে যায়।
তিনি জানান, ওই তরুণদের মধ্যে কেউ কেউ তাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে চাইলেও অন্যরা আপত্তি জানায়। পরে তারা তাকে ছদ্মবেশে (কালো মাস্ক ও লাল ব্যাজ লাগিয়ে) একটি অটোতে তুলে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়। পথে বিভিন্ন চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় তরুণেরা কৌশলে বলেছিল—“চাচা-চাচি অসুস্থ, হাসপাতালে নিচ্ছি।”
স্মৃতিচারণায় কাদের বলেন, “সেদিন বেঁচে যাওয়া ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। তারা চাইলে রাস্তায় জনতার হাতে কিংবা সেনাবাহিনীর কাছে তুলে দিতে পারত।”
পরে তিনি আরও প্রায় তিন মাস বাংলাদেশেই ছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা। তিনি জানান, এরপর ক্রমেই নেতারা গ্রেফতার হতে থাকেন এবং নিজের বিরুদ্ধে বহু মামলা থাকায় তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরও তিনি কলকাতায় নয় মাস ছিলেন এবং ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও জেল খেটেছেন। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক জীবনে এই রকম পালিয়ে থাকা ও বেঁচে যাওয়া তার জন্য নতুন কিছু নয় বলেই মন্তব্য করেন কাদের।