তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ইডিজিই (e-Government for Digital Inclusion and Growth) প্রকল্পের আওতায় দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ডিজিটাল স্কিলস ফর স্টুডেন্টস’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি করা, প্রোডাক্টিভিটি টুলস ব্যবহারে সক্ষম করা এবং ভবিষ্যতের কর্মবাজারে প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা হাতে-কলমে শিখবে মাইক্রোসফট অফিস, মাইক্রোসফট অফিস অ্যাপ্লিকেশনস এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন (GEX)। এর মাধ্যমে তারা কেবল মৌলিক আইসিটি দক্ষতা নয়, বরং গ্রাফিক্স ডিজাইন ও প্রোডাক্টিভিটি টুল ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
প্রাথমিকভাবে, গত ১৬ আগস্ট থেকে টাঙ্গাইলের কবরস্থান জামিয়া ইসলামিয়া দারুস-সুন্নাহ মাদ্রাসায় ১৬০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও টাঙ্গাইল জেলার আরও মাদ্রাসায় সম্প্রসারিত হবে এবং মোট ৭৪০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)।
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি শিক্ষার বাইরে থেকে এসেছে। গবেষণা অনুযায়ী, দেশের দাখিল স্তরের মাদ্রাসাগুলোর মাত্র ২৫ শতাংশে আইসিটি শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেখানে সাধারণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ হার ৭০ শতাংশের বেশি। প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর ঘাটতি, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব এবং সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার কারণে মাদ্রাসা শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তির সংযুক্তি পিছিয়ে ছিল।
এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই ইডিজিই প্রকল্প মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ চালু করেছে। উদ্যোগটির মাধ্যমে তারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে আত্মবিশ্বাসী হবে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতা করার মতো দক্ষতা অর্জন করবে এবং একই সঙ্গে দেশের সামগ্রিক ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে ভূমিকা রাখবে।
ইডিজিই প্রকল্পের প্রত্যাশা, এ প্রশিক্ষণের ফলে শিক্ষার্থীরা কেবল শিক্ষার মানোন্নয়নেই নয়, কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরিতেও এগিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে একদল স্মার্ট, দক্ষ ও প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ তরুণ প্রজন্ম তৈরি হবে, যা জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে।