শিলচরের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবাশিষ স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত বৈসারনে। গত মঙ্গলবার সেখানে পৌঁছানোর মাত্র ২০ মিনিট পরই শুরু হয় সন্ত্রাসী হামলা। তাঁদের চোখের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয় দু’জন পর্যটককে। আতঙ্কে পরিবারের সবাই একটি গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন।
স্মৃতি রোমন্থন করে দেবাশিষ জানান, সন্ত্রাসীরা তাঁদেরও হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করে। একজন ব্যক্তি আদেশ অমান্য করায় তাঁকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। “তার রক্ত আমার গায়ে এসে পড়ে। তখন দেখি আশেপাশের লোকজন কালেমা পড়ছে। আমিও সঙ্গে সঙ্গে কালেমা পড়া শুরু করি,” বলেন অধ্যাপক।
এক সন্ত্রাসী তখন তাঁকে প্রশ্ন করে, “কিয়া বোল রাহে হো?” অর্থাৎ, ‘তুমি কী বলছ?’ দেবাশিষ জানান, “তারা আমাকে কিছু বলেনি, কিন্তু আমি জানতাম কালেমা কীভাবে পড়তে হয়। এই আয়াতগুলোই আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছে।”
হামলা থেমে গেলে দেবাশিষ ও তাঁর পরিবার পাশের জঙ্গলে পালিয়ে যান এবং প্রায় দুই ঘণ্টা পর স্থানীয়দের সহায়তায় নিরাপদ স্থানে পৌঁছান। পরে তাঁরা গাড়ি করে শ্রীনগরে ফিরে যান।
এই ঘটনার পর আসাম সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পরিবারটি দিল্লি ও কলকাতা হয়ে শিলচরে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, এই হামলার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নির্ধারিত আসাম সফর স্থগিত করা হয়েছে।
দেবাশিষ ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা ডাল লেকে একদিন চমৎকার সময় কাটিয়েছিলাম। কিন্তু এই হামলা আমাদের ভ্রমণের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। এটা ছিল দুঃসহ ও হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা।”