জ্বীন দিয়ে ফিরিয়ে আনা হবে হাজার বছরের সংস্কৃতি, হবে সংস্কার - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ফেব্রুয়ারিতে ভোট ঢাবির আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের তিন বছরের ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান ঢাবি নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নবীন ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান শেকৃবি কৃষিবিদদের ৩ দফা দাবি নিয়ে আগারগাঁও ব্লকেড মাথার পেছনে গুলির চিহ্ন, রক্তে ভেসে থাকা বুক: ট্রাইব্যুনালে বাবার সাক্ষ্য তিন দফা দাবিতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন, পরীক্ষা স্থগিত গ্রিনল্যান্ডকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র-ডেনমার্কে নতুন কূটনৈতিক উত্তেজনা স্পেনে বুনোলে ৮০তম টোমাটিনা উৎসব, ১২০ টন টমেটো ছোড়াছুড়িতে মেতে উঠলেন ২২ হাজার মানুষ শেরপুরে নারীর সামর্থ্য উন্নয়ন ও জলবায়ু অভিযোজন প্রযুক্তি নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জ্বীন দিয়ে ফিরিয়ে আনা হবে হাজার বছরের সংস্কৃতি, হবে সংস্কার

খোকা হাসান
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৪৩ বার দেখা হয়েছে
জ্বীন কে যুক্ত করা হবে সংস্কারে

রম্য গল্প:

বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ইদানীং একটু বেশি গন্ধ লেগেছে আতর, আগর-বাতির। কারণ সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা জ্বীন সংযুক্ত করে হাজার বছরের সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনবেন। তার মূল বিশ্বাস — “বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি আর ফিরে আসছে না কারণ জ্বীনরা রাগ করে চলে গেছে।” ইদানীং বিভিন্ন ভাবে রুকইয়াহ কোর্স নিয়মিত ভাবে চলছে। জ্বীনদের কাজ কারবার পথে যেতে বসেছে। তাই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্ট একটি প্রস্তাব পাশ করিয়েছেন — “জ্বীন-সম্প্রীতি নীতিমালা ২০২৫”, যার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্বীন জাতির মন গলিয়ে হারানো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা।

প্রথম ধাপেই তিনি নিয়ে এলেন একজন ডানা ওয়ালা পুরুষ — নাম জানা যায়নি, তবে সে নি্জেকে বলে বায়ু-সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। কেউ বলে লজ্জাবতী বা এলজিবিটি, কেউ আবার ফিসফিস করে বলে, “ওই যে… ওইটা জ্বীন”। এই ডানা ওয়ালা পুরুষ গত তিন মাসে বিভিন্ন উৎসবে আচমকা দেখা দিয়ে যাচ্ছে — কারও র‌্যালীতে, কখনো কারও স্বপ্নে, আবার কখনো উৎসবে পেছনের হাওয়ায় ডানা মেলে।

কিন্তু সবশেষে যে ব্যাপারটা সবাইকে কাঁপিয়ে দিলো — তা হলো নববর্ষ ১৪৩২-এর ড্রোন শো।

ঢাকার আকাশজুড়ে ভেসে উঠলো এক অদ্ভুত দৃশ্য —
“৩৬ জুলাই জ্বীনদের ক্যালেন্ডারের তারিখ, ওটা মানুষ নিয়ে নিয়েছে। ৩৬ জুলাই এর পর দেখা গেল, খাঁচা থেকে ডানা মেলা মুক্ত পাখি, ১৯৭১ থেকে ২০২৪ – প্রথম স্বাধীনতা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা….
তারপর দেখা গেল— আবু সাঈদ, মুগ্ধ, কিছু সংগ্রামী মুখাবয়ব— সব ঠিকই ছিলো।

কিন্তু হঠাৎ করেই — ভাসলো সেই ডানা ওয়ালা জ্বীনের ছবি!

একজন শিশু চিৎকার করে বললো, “মা গো, এতো তো আগের বছর রমজানের রাত্রে আমার ঘরে এসেছিল!”
আরেক বয়স্ক দর্শক ফুঁ দিয়ে বললো, “এইবার যদি জ্বীন ভাই তুড়ি মেরে সব সংস্কার করে দেন, আমি উনাকে জাতীয় পুরস্কার দিব।”
উপদেষ্টা মাইকে বললেন,
“এই যে জ্বীন দেখানো হলো — এটা ‘সংস্কৃতির আধ্যাত্মিক কিউআর কোড’। এখন থেকে জ্বীনভাইদের সম্মান দিলে তারা হারানো মৃৎশিল্প, পালাগান, লোকসংগীত, আর গায়েনদের সব ফিরিয়ে দেবে।” চট করে সব ব্রিজ, এক্সপ্রেসওয়ে , আরো মেট্রো রেল, বুলেট ট্রেন, ইলেকিট্রিক ট্রেন, দ্বিতীয় প্দ্মা সেতু সব বানিয়ে দেবে আগামী নির্বাচনের আগে।

এক টিভি চ্যানেল রিপোর্ট করলো,
“জ্বীন জাতির সঙ্গে চুক্তি – এবার ধুনটের পালাগান ফিরছে জ্বীনের তুড়িতে!”

নববর্ষের ড্রোন শো তে ডানা ওয়ালা জ্বীন দেখানোর পরপরই ঢাকার প্রশাসনে শুরু হয় অদ্ভুত সব ঘটনা। পরদিন সকালেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় লাল টেপ বাঁধা একটা চিঠি পাওয়া গেল — প্রেরক: “জ্বীন জাতির সর্বোচ্চ পরিষদ”।

চিঠিতে লেখা:

“তোমাদের নববর্ষ অনুষ্ঠানে আমাদের প্রতিনিধি (ডানাওয়ালা ভাই) যথাযথ সম্মান পেয়ে খুশি হয়েছে। ফলত আমরা সংস্কৃতি সংরক্ষণের কাজে সহায়তা করতে রাজি আছি — তবে আমাদের কয়েকটি ছোটখাটো দাবি আছে।

ধন্যবাদান্তে,
— বড় জ্বীন, হেড অফ কালচার অ্যান্ড কোল্ড বায়ু”

দাবির তালিকা দেখে উপদেষ্টার চোখ চকচক করে উঠল:

১. সংস্কৃতি বিষয়ক কমিটিতে একজন জ্বীন হতে হবে।
২. সাংস্কৃতিক উৎসবে “জ্বীন বান্ধব বুথ” রাখতে হবে – যেখানে ধূপ, আগরবাতি এবং বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা থাকবে।
৩. একটি আলাদা বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে “লোকজ-জ্বীন ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পুনর্গঠন প্রকল্প এর জন্য।

এদিকে ফেসবুকে রীতিমতো আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে।
একদল মানুষ বলছে,
“মানববন্ধন চাই – জ্বীনদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে!”
আরেকদল বলছে,
“মুক্তিযুদ্ধে জ্বীনদের অবদান নিয়ে গবেষণা চাই!”

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডিপার্টমেন্ট তো নামই বদলে ফেলেছে —
“থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ” এখন হয়েছে: “থিয়েটার, জ্বীন অ্যান্ড পারফরম্যান্স”।

তবে সবচেয়ে বড় চমক এল জুন মাসে। জাতীয় বাজেট ঘোষণার দিন অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা প্রেজেন্টেশন দিবেন। এ প্রেজেন্টেশন আশিক চৌধুরীর প্রেজেন্টেশন টেক্কা দিতে হবে। এবার স্ক্রিণে বাজেট উপস্থাপন করা হলো না,  পুরোটা  করা হলো হলোগ্রাফিক প্রেজেন্টেশনে।  একজন গায়েন — আর সাথে উপস্থিত ছিলেন সেই ডানা ওয়ালা পুরুষ জ্বীন, এবার একহাতে বাজেট, আরেকহাতে আগরবাতি, ধোয়া। পুরো কনভেনশন সেন্টারে তখন গন্ধ ছড়াচ্ছে “কাঠি আগর-স্যান্ডাল সুগন্ধি”র।

তিনি বললেন:
“এইবার বাজেট তৈরি জ্বীনভাইয়েরা সহায়তরা করেছেন। আফ্রিকা, তুরস্ক, আমেরিকা, নাগাল্যান্ড সব শ্রেণীর জ্বিনদের সাথে বোঝাপোড় করা হয়েছে। বিদেশী ইনভেস্টররা না এলেও জ্বিনরা এসে সব কাজ করে দেবে। আগারবাতির ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে তারা হিসাব পাঠিয়েছেন। এবার ট্যাক্স ফাঁকি দিলেই ঘরে হাওয়ার গুঞ্জন শোনা যাবে! জ্বিনদের উপদ্রব শুরু হবে ট্যাক্স ফাঁকি দিলেই। ঋণ খেলাপিরা শান্তি মতো ঘুমাতে পারবে না। সব ‍অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করে দেবে জ্বীন।

এদিকে  চিন থেকে আসা ওঝা রাক্বি চিশংতী, যিনি আগেই ড্রোন ঝাড়ফুঁক করে জ্বীনকে ঢাকার আকাশে উড়িয়েছিলেন, এখন হয়েছেন “প্রধান জ্বীন কনসালট্যান্ট”।
উনি নিয়মিত ব্রিফিং দেন,
“জ্বীনদের মনোভাব আজ কিছুটা গুমোট। রোদ বেশি হলে তারা উত্তেজিত হয়। পান্তা-ইলিশ না খাওয়ালে অভিমান করে।” আর জ্বীনদের রাজকীয়ভাবে রাখা হয়েছে ৫৬০ টি মডেল মসজিদে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT