ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে গঞ্জাম জেলার ধারাকোটে গো-পাচারের মিথ্যা অভিযোগে দুই দলিত যুবককে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, যা সমগ্র বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ৫৯ বছর বয়সী বাবুলা নায়ক এবং তার ৫৪ বছর বয়সী চাচাতো ভাই বুলু নায়ককে জনসমক্ষে মাথা ন্যাড়া করে, মারধর করে, এমনকি হাঁটু গেঁড়ে এক কিলোমিটারের বেশি পথ হামাগুড়ি দিতে এবং ঘাস ও নর্দমার পানি পান করতে বাধ্য করা হয়। এই পাশবিক ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
This will happen in Hindu Rashtra:
Bajrang Dal goons attacked poor Dalit men in Odisha on the suspicion of cow-smuggling, forced them to drink drain water, eat grass & walk through the village on their knees.
In UP, a Yadav 'Bhagwat katha-vachak' was beaten up by Brahmins, his… pic.twitter.com/8LGir2OI6H
— Tarun Gautam (@TARUNspeakss) June 24, 2025
রবিবার ঘটে যাওয়া এই বর্বরোচিত ঘটনার পর ওড়িশা পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মঙ্গলবার আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যদিও মূল অভিযুক্ত রাজা সামাল এখনো পলাতক। গঞ্জাম জেলার পুলিশ সুপার শুভেন্দু পাত্র জানিয়েছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য গো-রক্ষা ছিল না, বরং তা ছিল চাঁদাবাজি। অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিও দেখে দ্রুত অর্থ উপার্জনের লোভে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা ৩০,০০০ টাকা দাবি করেছিল এবং সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় এই অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। ভুক্তভোগীদের মতে, গরুটি বাবুলা নায়কের মেয়ের বিয়ের জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী উপহার হিসেবে আনা হচ্ছিল।
এই ঘটনা দলিত সম্প্রদায়ের প্রতি সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য এবং তাদের নিরাপত্তাহীনতাকে নতুন করে সামনে এনেছে। উড়িষ্যা কংগ্রেসের সভাপতি ভক্ত চরণ দাস এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে উড়িষ্যায় দলিতরা ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে পড়ছেন এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। বিরোধী বিজু জনতা দল (বিজেডি)-ও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ছে। গঞ্জাম জেলা দলিত মহাসংঘের সভাপতি সংগ্রাম নাহাকও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে গো-রক্ষার নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এই ঘটনা সমাজে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা এবং এমন বর্বরতার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থার গুরুত্বকে আবারও তুলে ধরেছে।