
শহরের বহুসাংস্কৃতিক এলাকা লাভাপিয়েস (Lavapiés)–এ একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ‘লস্ট রিপোর্ট’ তৈরি করে দিচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
পাসপোর্ট হারানোর পর থানায় সরাসরি অভিযোগ করতে অনীহা কিংবা আইনি প্রক্রিয়ার ঝামেলা এড়াতে অনেক প্রবাসী সহজ উপায়ে নথি সংগ্রহের আশায় এই চক্রের কাছে যাচ্ছেন। আর এই সুযোগে অসাধু ব্যক্তিরা বিপদে পড়া প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্ট পুনরায় ইস্যুর জন্য আবেদন করতে গিয়ে কয়েকজন আবেদনকারী এসব নকল লস্ট রিপোর্ট জমা দেন। নিয়ম অনুযায়ী দূতাবাস নথিপত্র যাচাই এবং বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিলিয়ে দেখে। যাচাই–প্রক্রিয়ায় নথি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দূতাবাস সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে একাধিক আবেদনকারী স্বীকার করেছেন যে তাঁরা লাভাপিয়েস এলাকার একটি চক্রের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে এসব ভুয়া রিপোর্ট সংগ্রহ করেছিলেন।
দূতাবাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পাসপোর্ট–সংক্রান্ত তথ্য জাল করা বা ভুয়া রিপোর্ট জমা দেওয়া শুধু অনিয়ম নয়, এটি একটি গুরুতর অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ প্রমাণিত হলে আবেদন তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে পরিবার পুনর্মিলন, রেসিডেন্সি নবায়ন, স্থায়ী আবাস কিংবা স্পেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতেও বড় ধরনের আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
দূতাবাস আরও জানায়, একবার ‘ফ্রড রেকর্ড’ তৈরি হলে তা দীর্ঘদিন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে থেকে যায় এবং ভবিষ্যতের প্রায় সব ধরনের অভিবাসন–সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এ পরিস্থিতিতে প্রবাসী কমিউনিটিকে সতর্ক করে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, পাসপোর্ট হারালে অবশ্যই আইনানুগ উপায়ে নিকটস্থ থানায় বা সংশ্লিষ্ট বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে হবে। জাল নথি ব্যবহার করে সাময়িক সুবিধা পাওয়া গেলেও তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের আইনি ও ব্যক্তিগত সংকট ডেকে আনতে পারে।
কমিউনিটির স্বার্থে এ ধরনের ভুয়া নথি সরবরাহকারী চক্রের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।