নতুন রুটে ক্যানারির পথে অভিবাসন: বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ফেসবুকের মেটা ও টিকটক মামলার মুখে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে: রুমিন ফারহানা আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ইউরোপীয় ফুটবলের অধ্যায় শেষ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকে নির্বাচনের সময়সূচি চূড়ান্ত লিবিয়ার উপকূলে ২৮ বাংলাদেশি আটক ইউরোপজুড়ে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত নিয়োগে নেই সুপারিশের প্রভাব, নোবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগে নতুন ধারা নতুন রুটে ক্যানারির পথে অভিবাসন: বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি ‘গবেষণা পদ্ধতি’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো জাককানইবিতে ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

নতুন রুটে ক্যানারির পথে অভিবাসন: বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

সালমান বক্স (স্পেন প্রতিনিধি)
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৮ বার দেখা হয়েছে

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জগামী আটলান্টিক রুটে অভিবাসীদের যাত্রাপথে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। নিরাপত্তা কড়াকড়ির কারণে পশ্চিম আফ্রিকার গিনি ও গিনি-বিসাউ এখন নতুন কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। ফলে সমুদ্রপথ দীর্ঘ এবং আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এতে অভিবাসীদের মৃত্যু ও নিখোঁজ হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

সেনেগাল ও মৌরিতানিয়ায় নজরদারি বাড়ায় আগে যেখান থেকে অভিবাসীরা রওনা দিতেন, এখন তা পরিবর্তন করে পাচারকারীরা গিনিকে ব্যবহার করছে। কখনও কখনও এই ভয়ংকর সমুদ্রযাত্রায় ১০ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। খাদ্য, পানি, ওষুধের অভাব এবং নৌযান বিকলের মতো কারণে অনেকেই সমুদ্রেই মারা যাচ্ছেন।

ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের সরকারি প্রতিনিধি আনসেলমো পেস্টানা বলেন, “মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে, কারণ তারা নিরাপত্তা ফাঁকি দিতে সমুদ্রের আরও গভীরে যাত্রা করছে।”

সম্প্রতি গিনি থেকে ছেড়ে আসা একটি নৌকা ক্যানারির লা রেস্তিঙ্গা উপকূলে ডুবে গেলে চার নারী ও তিন কিশোরীর মৃত্যু হয়। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা এখন নিয়মিত ঘটছে।

মানবাধিকার সংগঠন ‘কামিনান্দো ফ্রন্তেরাস’ জানায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সমুদ্রে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৮৬৫ জন অভিবাসী। এর মধ্যে শুধু ক্যানারি রুটেই প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৪৮২ জন। নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ৩৮টি নৌকা। মৃতদের মধ্যে ৩৪২ জন শিশু এবং ১১২ জন নারী রয়েছেন।

তবে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (IOM) শুধুমাত্র নিশ্চিত মৃত্যুর তথ্য লিপিবদ্ধ করে, ফলে তারা এই সময়ে মাত্র ৪০টি মৃত্যুর কথা নথিভুক্ত করেছে।

কামিনান্দো ফ্রন্তেরাসের মতে, সময়মতো উদ্ধার তৎপরতা না থাকায় মৃত্যুহার বাড়ছে। অনেক সময় বিপদ সংকেত দেওয়া হলেও তা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয় না।

এদিকে, আলজেরিয়া হয়ে স্পেনের বালিয়ারিক দ্বীপপুঞ্জে আসার পথও নতুন করে আলোচনায় এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে বেশ কিছু নৌকায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় অভিবাসীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা পাচারকারী চক্রের সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

যদিও আগমনের হার কিছুটা কমেছে—২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত স্পেনে পৌঁছেছেন ১৫ হাজার অভিবাসী, যা আগের বছরের তুলনায় ২৭ শতাংশ কম—তবু ঝুঁকি কমছে না। বরং আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে ক্যানারি ও বালিয়ারিক পথ।

এই প্রবণতা ইউরোপীয় সীমান্ত ব্যবস্থার কড়াকড়ি এবং আফ্রিকার তীব্র দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি নির্মম প্রতিফলন। মানবপাচার বন্ধ ও জীবনরক্ষা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে আরও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT