বিপিএলের ফাইনালে রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ের পর টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরলো ফরচুন বরিশাল। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দরকার ছিল বরিশালের, চিটাগং কিংস অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন বল তুলে দেন হুসাইন তালাতের হাতে। তবে প্রথম বলেই রিশাদ হোসেন বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেন। এরপর একটি সিঙ্গেল ও ওয়াইড বলের সুবাদে তিন বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বরিশাল।
১৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে বরিশাল মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে জয় পায়। এই জয়ের ফলে বিপিএলে টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুললো তারা, যা এর আগে কেবল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পেরেছিল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জমজমাট ফাইনালের পর বিজয়ী দলের জন্য আয়োজিত হয় বর্ণাঢ্য লেজার শো। বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, ট্রফি নিয়ে লঞ্চে করে বরিশালে ফিরতে চান। সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন ঝড়ো ফিফটি হাঁকিয়ে।
চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বরিশাল পেয়েছে আড়াই কোটি টাকা প্রাইজমানি, আর রানার্সআপ চিটাগং কিংস পেয়েছে দেড় কোটি টাকা।
১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বরিশালের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। তামিম ইকবাল ২৯ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন, যেখানে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। তার সঙ্গে ওপেনিংয়ে থাকা তাওহিদ হৃদয়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এরপর কাইল মায়ার্স ৪৬ রান করে ম্যাচকে সহজ করে দেন।
তবে ম্যাচের শেষদিকে কিছুটা চাপে পড়ে ফরচুন বরিশাল। দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়লেও চিটাগংয়ের ফিল্ডিং দুর্বলতার সুযোগ নেয় বরিশাল। শেষ পর্যন্ত রিশাদ হোসেনের ম্যাচ ফিনিশিং শট বরিশালের মুখে হাসি ফোটায়।
চিটাগং কিংসের হয়ে পারভেজ হোসেন ও খাজা নাফি দারুণ ব্যাটিং করেন। পারভেজ ৪৯ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন, আর নাফি ৪৪ বলে ৬৬ রান করেন। এছাড়া গ্রাহাম ক্লার্কের ২৩ বলে ৪৪ রানের ক্যামিও ইনিংস দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। তবে শেষ ওভারে দ্রুত উইকেট হারানোর কারণে তারা ২০০ রানের মাইলফলক ছুঁতে পারেনি এবং ১৯৪ রানেই থেমে যায়।
সাত উইকেট হাতে রেখেও ২০০ রান পার করতে না পারায় চিটাগংয়ের ব্যাটিং পরিকল্পনায় স্পষ্ট দুর্বলতা ছিল। আরও সাহসী ব্যাটিং করলে হয়তো তারা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে পারত। তবে বরিশালের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং শেষ মুহূর্তের চাপে ব্যর্থতা তাদের স্বপ্নভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বরিশালের এ জয়ে দলটি বিপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় দল হিসেবে টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি গড়ল। তামিমের নেতৃত্বে বরিশাল এখন বিপিএলের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। অন্যদিকে চিটাগং কিংসের স্বপ্ন আরেকবার ভেঙে গেল। পরবর্তী আসরে তারা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আরো পড়ুনঃ ‘ভারতকে হারানোই প্রকৃত লক্ষ্য’: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রসঙ্গে শেহবাজ শরিফ
Leave a Reply