কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বাগভান্ডার গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহিনুর আলম দেশের কৃষি খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে যুগান্তকারী এক উদ্ভাবন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণা দলের মাধ্যমে গ্রীনহাউস পরিবেশে পাকা টমেটো শনাক্ত ও অবস্থান নির্ধারণে পাঁচটি ভিন্ন Keras ভিত্তিক ডিপ লার্নিং মডেল তৈরি করা হয়েছে।
এই গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রকাশনা সংস্থা Elsevier-এর Journal of Agriculture and Food Research-এর ২০২৫ সালের অক্টোবর সংখ্যায় (Volume 23) প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধের শিরোনাম: “Detection and localization of ripe tomato in greenhouse environment using Keras-based deep learning models.”
গবেষণা দলে শাহিনুর আলমের সঙ্গে ছিলেন অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী। তারা যৌথভাবে এমন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন, যা গ্রীনহাউসের অভ্যন্তরের ছবি বিশ্লেষণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাকা টমেটো শনাক্ত করতে পারে এবং সেগুলোর অবস্থান নির্দেশ করে। এর ফলে কৃষক সহজেই ফলন সংগ্রহের উপযুক্ত সময় নির্ধারণ করতে পারবেন। পাশাপাশি রোবটের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টমেটো উত্তোলনও সম্ভব হবে, যা সময়, শ্রম ও খরচ কমাবে, এবং অপরিপক্ব টমেটো তোলার ঝুঁকি হ্রাস করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের স্মার্ট কৃষি (Smart Farming) যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি কৃষিকে আরও আধুনিক, টেকসই ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক করে তুলবে।
মো. শাহিনুর আলম বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, “এই গবেষণা স্বল্পমূল্যের স্বয়ংক্রিয় ফসল উত্তোলন ব্যবস্থা বা হারভেস্টিং রোবট উদ্ভাবনের একটি প্রাথমিক ধাপ। আমরা কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের ‘Smart Agriculture Lab’-এ এ নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি অদূর ভবিষ্যতে আমরা সফল হবো।”
এই অর্জনে ভূরুঙ্গামারীজুড়ে বইছে গর্বের হাওয়া। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “শাহিনুর আলম আমাদের এলাকার গর্ব। সে বাংলাদেশের নাম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরছে।”