শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তায় - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
চান্দিনায় মাকসুদা বেগমকে অমানবিক নির্যাতন, ভাশুরের পরিবারকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ কুবিতে গবেষণার মৌলিক ধারণা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত ধর্মীয় সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ – ভারতে ডুবে যাওয়া গাড়ি থেকে যুবককে বাঁচালেন মাঝি ফয়জাল কুবি প্রেস ক্লাবের নেতৃত্বে তনয়–আব্দুল্লাহ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের চার দফা দাবিতে আজ থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষাও স্থগিত শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তায় কুবিতে ইউট্যাবের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত স্কটল্যান্ডের অনারারি কনসাল জেনারেল হলেন ড. ওয়ালী তছর উদ্দিন এমবিই সড়ক সংস্কারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ভোলা বরিশাল সেতুর দাবিতে ইবিতে মানববন্ধন

শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তায়

সাবাস বাংলাদেশ ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার দেখা হয়েছে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম ও ১১তম বেতন গ্রেডসহ তিন দফা দাবিকে ঘিরে আবারও স্থবিরতায় পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষাখাত। দুই গ্রুপের লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণায় আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে সহকারী শিক্ষকদের টানা কর্মবিরতির কারণে। চাকরির শুরুতে ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে গতকাল মঙ্গলবার থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছে সহকারী শিক্ষকদের একাংশ—যা চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। দাবি পূরণ না হলে তারা বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন ও ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশনের ঘোষণা দিয়েছে।

এর মধ্যে আরও একটি সংগঠন—প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ—আজ (১, ডিসেম্বর) থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। চার সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত এই পরিষদ দাবি না মানা পর্যন্ত স্কুলে উপস্থিত থাকলেও ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

অন্যদিকে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে যে সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম থেকে সরাসরি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা বর্তমানে সম্ভব নয়। মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে সরকারের অতিরিক্ত বার্ষিক ব্যয় হবে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকা। এমনকি ১১তম গ্রেড দিলেও বাড়বে ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ৬৬ হাজার এসএসসি–এইচএসসি পাস শিক্ষক কর্মরত আছেন, যা ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের পথে প্রধান বাধা। তাদের অবসরে যেতে আরও অন্তত ১০ বছর লাগবে; ফলে পুরো সিস্টেমে স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেড কাঠামো পরিবর্তন সম্ভব নয়।

দেশজুড়ে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক সংখ্যা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১ জন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক আছেন মাত্র ৩৫ হাজার; বাকি সবাই সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৮৫—এর মধ্যে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ছে ১ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৫ জন, যা সমগ্র প্রাথমিক শিক্ষার্থীর ৫৫.৭৩ শতাংশ।

গত ৮ নভেম্বর পুলিশের সঙ্গে বিবাদের ঘটনায় আহত শিক্ষক ও নিহত শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তারের পরিবারের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পূর্ণ পেনশন দেওয়ার দাবিও উত্থাপন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান—দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ছাড়া বিকল্প নেই।

এর আগে বছরের শুরু থেকে সহকারী শিক্ষকরা গ্রেড উন্নয়নসহ নানা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছেন। মে মাসে টানা কর্মবিরতির পর সরকারের আশ্বাসে তারা ক্লাসে ফিরে গেলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আন্দোলন পুনরায় তীব্র হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া ১১তম গ্রেডের আশ্বাসও এখনো বাস্তব অগ্রগতিতে পরিণত হয়নি বলে শিক্ষকদের ক্ষোভ বাড়ছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জানায়, ১৯৯১ সালের বিধিমালা অনুযায়ী এসএসসি বা এইচএসসি পাস যারা নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাদের অবসরে যেতে আরও সময় লাগবে। এর পরই শতভাগ স্নাতক শিক্ষক নিশ্চিত হবে; তার আগে দশম গ্রেডে উন্নীত করা বাস্তবসম্মত নয়।

চলমান দ্বন্দ্ব–দাবি–ঘোষণায় সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। ৮ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক থাকলেও বৃহত্তম শিক্ষকশ্রেণির আন্দোলনে পরীক্ষা আদৌ শুরু হবে কি না—সে বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছে না সরকার।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT