দেশের মোট ১০টি সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে প্রায় একই ধরনের সংকট বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পরীক্ষার রুটিন যথাসময়ে প্রকাশ হয় না, ফলাফল দিতে দেরি হয় এবং সেমিস্টার ও রিটেক ফি শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে যাচ্ছে। এতে পড়াশোনার পাশাপাশি যথাসময়ে উচ্চশিক্ষা ও চাকরির সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এসব সমস্যা নিরসনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা একাধিকবার আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেছে। সম্প্রতি বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সাত দফা দাবিতে তারা বিক্ষোভ মিছিল, ক্যাম্পাসে তালা ঝুলিয়ে ‘অল শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন এবং বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। একই দাবিতে জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেয়। ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে কয়েকদিন ধরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছিলেন তারা।
বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, “আমাদের কলেজে মাত্র দশজন স্থায়ী শিক্ষক আছে। বেশিরভাগ ক্লাস অতিথি শিক্ষকের মাধ্যমে চলে, যা যথেষ্ট নয়। কলেজের জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ হয় না। সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। আমরা বারবার দাবি জানিয়েও সমাধান পাচ্ছি না।”
এছাড়াও রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইয়ার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. নাছিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের কলেজে ৬০ জন শিক্ষকের প্রয়োজন থাকলেও আছেন মাত্র ১৩ জন। এর মধ্যে কেবল ৩ জন বিএসসি ডিগ্রিধারী, বাকিরা ডিপ্লোমাধারী। পাশাপাশি গবেষণা ও উচ্চশিক্ষারও যথেষ্ট সুযোগ নেই।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ইয়ার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও কলেজ পরিদর্শক ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে বুটেক্সের অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে ১০টি। এসব কলেজে দ্বৈত প্রশাসন চলছে। অর্থাৎ, একাডেমিক কার্যক্রম যেমন ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলাফল বুটেক্স তদারকি করে, আর প্রশাসনিক ও শিক্ষক নিয়োগসহ বাজেট বরাদ্দ সম্পূর্ণ বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও পিএসসির অধীনে।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষক নিয়োগ কিংবা বাজেট ব্যবস্থাপনায় বুটেক্সের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দ্রুত রেজাল্ট প্রকাশ করেছি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মার্কশিট প্রদানের কাজ সম্পন্ন করা হবে।”