নোবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে অভিযানে দুদক - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
কওমি ডিগ্রিধারীদের জন্য কাজী হওয়ার দরজা খুলল; আরও সরকারি খাত উন্মুক্তের দাবি সীমান্তে তীব্র গুলি বিনিময়, পাকিস্তান–আফগানিস্তান উত্তেজনা চরমে জাককানইবিতে সমুদ্র ও জলবায়ু–বিষয়ক ‘Exploring the Blue Earth’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত দুধকুমার নদে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপ, স্বস্তিতে তীরবর্তী বাসিন্দারা ইবিতে জুলাই বিপ্লববিরোধী অভিযোগে ফের ৯ শিক্ষক বরখাস্ত নানিয়ারচর জোন (১৭ই বেংগল) এর মানবিক উদ্যো‌গে বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রথম নির্বাহী পরিচালক হলেন মো. সাদি উর রহিম জাদিদ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে ইবিতে আলোচনা সভা জামায়াতের মনোনয়নে কে এই হিন্দু প্রার্থী ভারত ছাড়তে তড়িঘড়ি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল

নোবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে অভিযানে দুদক

মো: নাঈমুর রহমান, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ১১৪ বার দেখা হয়েছে

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগে গুরুতর অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে তোলপাড় চলছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২১ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপসহকারী পরিচালক মো. জাহেদ আলম এবং কোর্ট পরিদর্শক মো. ইদ্রিস। অভিযান চলাকালে তাঁরা শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ড. মো. শফিউল্লাহ নামে একজনকে নিয়োগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রণীত স্পষ্ট নিয়োগ নীতিমালা লঙ্ঘন করে তাঁকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের বিষয়টি গত ২৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় চূড়ান্ত হয়।

ড. শফিউল্লাহ পূর্বে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র লেকচারার পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু নিয়োগপ্রাপ্ত এই ব্যক্তি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ ও নোবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ড সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সোলাইমানের ছোট ভাই হওয়ায় স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। সমালোচকরা বলছেন, তাঁকে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক না করেই সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা ইউজিসির বিধিমালা অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। কারণ, সহযোগী অধ্যাপক পদে আবেদন করতে হলে কমপক্ষে চার বছর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয় এবং শিক্ষাজীবনের প্রতিটি স্তরে নির্ধারিত জিপিএ থাকতে হয়।

এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ১০ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে একাধিকবার সংশোধনী আনা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সংশোধনীগুলো আনা হয় কিছু নির্দিষ্ট প্রার্থীকে নিয়োগে সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। এই সংশোধনীগুলো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব ও নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আরও জোরালো করেছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান অভিযানের বিষয়ে বলেন, “নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে আমরা এই অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রাথমিকভাবে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, যা ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে বিশ্লেষণের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল সমস্ত অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ীই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সিনিয়র লেকচারার ও সহকারী অধ্যাপককে সমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া, প্রার্থী পিএইচডি ডিগ্রিধারী হওয়ায় আমরা নীতিমালার নির্দিষ্ট কিছু শর্ত শিথিল করেছি। সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।”

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের নিয়োগ যদি যাচাই ছাড়াই নিয়মভঙ্গ করে হয়, তবে তা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নৈতিকতা ও ন্যায্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এখন সবার দৃষ্টি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের দিকে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT