সত্য গোপনে এক ধাপ এগিয়ে 'প্রথম আলো' ও 'ঢাকা ট্রিবিউন' - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ট্রাভেল পাস কি এবং কেন তারেক রহমান-এর এটি প্রয়োজন হলো মেডেল অব সাকসেস অ্যাওয়ার্ড পেলেন রাজশাহীর হাফিজুর রহমান  ৯ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার লক্ষ্যে লন্ডনে ট্রাভেল পাসের আবেদন তারেক রহমানের খুলনায় সাংবাদিক এমদাদুল হক মিলনকে গুলি করে হত্যা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন সামনে রেখে ঢাকা–লন্ডন রুটে বিমানের সব টিকিট বিক্রি শহীদ হলেন ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদি ডিএসইর নতুন এমডি নুজহাত আনোয়ার, তিন বছরের নিয়োগ অনুমোদন বিএসইসির নির্বাচন ঘিরে ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ইসির বাংলাদেশের ৫৫তম বিজয় দিবস উপলক্ষে হাউস অব লর্ডসে ড. ওয়ালী তসর উদ্দিন এমবিই-কে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত

সত্য গোপনে এক ধাপ এগিয়ে ‘প্রথম আলো’ ও ‘ঢাকা ট্রিবিউন’

জুনাইন ইসলাম
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫২ বার দেখা হয়েছে

“তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং সত্য জেনেও গোপন করো না।”

—(সূরা আল-বাকারা: ৪২)

এই আয়াতটি বারবার কানে বাজে, যখন দেখি—গণমাধ্যমের কিছু প্রভাবশালী অংশ সত্য উচ্চারণের জায়গায় কৌশলে নীরবতা পালন করছে। গতকাল গোপালগঞ্জে যা ঘটেছে, তা ছিল এনসিপি ও পলাতক আসামি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ-এর মধ্যে প্রকাশ্য সংঘর্ষ। ঘটনাটি ছিল মারাত্মক এবং জননিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। কিন্তু যেভাবে “প্রথম আলো” ও “ঢাকা ট্রিবিউন” এই ঘটনাকে তুলে ধরেছে—তা অত্যন্ত অসচেতন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একধরনের তথ্যচিহ্ন মুছে ফেলার অপচেষ্টা।

প্রথম আলো লিখেছে: “একদল ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে”,
ঢাকা ট্রিবিউন বলেছে: “গ্রামবাসীরা জড়িত”।

প্রশ্ন হলো—কোনো সংঘর্ষে যদি নিষিদ্ধ কোনো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে, তাহলে তাদের নাম গোপন করে এইরকম অস্পষ্ট ভাষা ব্যবহার করা কীভাবে পেশাদার সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে? আজ যদি এই ঘটনায় কোনো ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল জড়িত থাকতো, তবে কি ‘একদল ব্যক্তি’ বা ‘গ্রামবাসী’ বলেই সংবাদ প্রকাশ হতো? না, বরং শিরোনামেই থাকতো—“উগ্র ইসলামপন্থীদের সহিংস তাণ্ডব”।

এটাই কি আমাদের তথাকথিত নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার মানদণ্ড?

বর্তমান সাংবাদিকতা এখন যেন পক্ষপাতিত্বের শৈল্পিক রূপ। যারা বছরের পর বছর ধরে ইসলামী আদর্শ ও ইসলামপন্থী রাজনীতিকে অপপ্রচার, সন্দেহ, এবং বিকৃতির মাধ্যমে নিঃশেষ করার চেষ্টা করেছে—তারা আজ এক নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর নাম উচ্চারণ করতে পর্যন্ত দ্বিধা করছে। অথচ এরা অতীতে সরকারের পক্ষ থেকে সাজানো মামলা ও তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে ইসলামপন্থীদের রাজনৈতিকভাবে দমন করতে সংবাদ প্রকাশে একচুল পিছপা হয়নি।

আজ তারা সেই একই আদর্শিক নির্লজ্জতা অবলম্বন করে সংবাদের ভাষাকে বানিয়ে ফেলেছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অস্পষ্ট। অথচ সত্য উচ্চারণের মধ্যেই তো সাংবাদিকতার মহত্ত্ব। একটি নিষিদ্ধ দলের সহিংসতাকে ‘গ্রামবাসী’র লেবেল দিয়ে উপস্থাপন করা মানেই সত্যকে চেপে গিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো।

একটি সংঘর্ষে যখন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক শক্তি অংশগ্রহণ করে, তখন গণমাধ্যমের নৈতিক দায়িত্ব হলো সত্য ও নির্ভুল তথ্য উপস্থাপন করা। কিন্তু যখন নাম গোপন করে প্রভাব লঘু করা হয়, তখন সেটি আর সাংবাদিকতা থাকে না, বরং হয়ে যায় ইতিহাস বিকৃতির অংশ।

“এটা কোনো নিরপেক্ষতা নয়। এটা হল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নীরবতা”।

আসলে এ ধরনের আচরণ জাতিকে বিভ্রান্ত করে। এতে অপরাধী বাঁচে, আর ভুক্তভোগী হয়ে পড়ে প্রশ্নবিদ্ধ। মিডিয়া যদি প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে রাখে, তাহলে সত্য জানার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হয়।

মিডিয়াকে জনগণের চোখ ও কণ্ঠ বলা হয়। কিন্তু যখন সেই চোখ অন্ধ হয় আর কণ্ঠ বিক্রি হয়, তখন সেগুলো আর মিডিয়া থাকে না, তখন তারা হয়ে যায় অন্যায়ের প্রচারক।

সাংবাদিকতার দায়িত্ব কেবল তথ্য পরিবেশন নয়, বরং তথ্যকে সঠিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা। এক্ষেত্রে সত্য গোপন করা মানে অন্যায়ের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করা। গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া ঘটনার যথাযথ তথ্য পরিবেশন থেকে বিরত থেকে “প্রথম আলো” ও “ঢাকা ট্রিবিউন” প্রমাণ করেছে—তারা সত্য নয়, বরং সুবিধাবাদী কাঠামোর মধ্যেই নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করেছে।
এটাই সাংবাদিকতার জন্য সবচেয়ে বড় অবনমন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT