০৩ জুলাই ২০২৫
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থাপিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের অবস্থা ভয়াবহ। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দুই লাখের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।”
তিনি গাজায় পরিচালিত তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’-কে ক্ষুধার্ত ও দুর্বল জনগণকে হত্যা কিংবা বিতাড়নের জন্য তৈরি করা একটি ‘মৃত্যুফাঁদ’ হিসেবে আখ্যা দেন।
আলবানিজ আরও বলেন, অস্ত্র কোম্পানিগুলো এই যুদ্ধে ইসরায়েলকে সরবরাহ করা অস্ত্র থেকে বিপুল মুনাফা করেছে। গত ২০ মাসে তারা প্রায় রেকর্ড লাভ করেছে, যেখানে গাজা ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়েছে ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক—যা হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার ছয় গুণ বেশি শক্তিশালী।
তিনি জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে তেল আবিব স্টক এক্সচেঞ্জে ২১৩ শতাংশ লাভ হয়েছে, যা স্পষ্টভাবে দেখায়, কেউ কেউ লাভবান হয়েছে, কেউ কেউ হারিয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনকে ‘ইসরায়েলি সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের পরীক্ষাগার’ বলে উল্লেখ করে আলবানিজ অভিযোগ করেন, নতুন অস্ত্র, নজরদারি প্রযুক্তি ও ড্রোন পরীক্ষার কাজে যুদ্ধকে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। তিনি আরও জানান, অন্তত ৪৮টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের দখলদার নীতিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইসরায়েলের ওপর পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, সব ধরনের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ স্থগিত করতে হবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
আলবানিজ স্পষ্টভাবে বলেন, এত বড় পরিসরে গণহত্যা চলতে থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব যে চুপ করে আছে, তা শুধু অজ্ঞতা বা আদর্শগত কারণে হচ্ছে—এ বিশ্বাস আর রাখেন না তিনি। তাঁর মতে, এখন নাগরিক সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবী ও সাধারণ জনগণকে সক্রিয় হয়ে বয়কট ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। “এরপর কী হবে, তা আমাদের সবার উপর নির্ভর করে,” বলেন তিনি।