আফগান শরণার্থী : আফগানদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে ট্রাম্প প্রশাসন - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে এগিয়ে থাকা মামদানি এখন ইসলামবিদ্বেষের শিকার! ফেসবুকের মেটা ও টিকটক মামলার মুখে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় আওয়ামী লীগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে: রুমিন ফারহানা আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ইউরোপীয় ফুটবলের অধ্যায় শেষ করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকে নির্বাচনের সময়সূচি চূড়ান্ত লিবিয়ার উপকূলে ২৮ বাংলাদেশি আটক ইউরোপজুড়ে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত নিয়োগে নেই সুপারিশের প্রভাব, নোবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগে নতুন ধারা নতুন রুটে ক্যানারির পথে অভিবাসন: বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি ‘গবেষণা পদ্ধতি’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো জাককানইবিতে

আফগান শরণার্থী : আফগানদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে ট্রাম্প প্রশাসন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭৩ বার দেখা হয়েছে
একজন আফগান শরণার্থী পরিবার নিউ জার্সিতে অস্থায়ী বাসস্থানের পাশ দিয়ে হাঁটছে, ছবি: রয়টার্স
একজন আফগান শরণার্থী পরিবার নিউ জার্সিতে অস্থায়ী বাসস্থানের পাশ দিয়ে হাঁটছে, ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রায় ১৪,৬০০ আফগান শরণার্থী যাদের সাময়িকভাবে আশ্রয়ের অধিকার ছিল, তারা এখন সেই আইনি সুরক্ষা হারাতে যাচ্ছেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের এক মুখপাত্র এই সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এই আফগান নাগরিকরা মূলত “টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস” (টিপিএস) নামক একটি আইনি মর্যাদার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন। এটি এমন ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য, যাদের দেশে ফিরে যাওয়া যুদ্ধ, সহিংসতা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনিরাপদ।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা আরোপের অংশ হিসেবে অনেক দেশের টিপিএস বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো আফগান শরণার্থী।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম বলেন, “আফগানিস্তানের বর্তমান অবস্থা টিপিএস-এর মানদণ্ড পূরণ করে না।” তবে সমালোচকরা বলছেন, এই মূল্যায়ন বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

আফগানিস্তানে এখনো তালেবান সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। ২০২১ সালে মার্কিন ও পশ্চিমা বাহিনী প্রত্যাহার করার পর থেকে তারা শাসন করছে, এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পূর্বতন সরকার-সমর্থকদের গ্রেফতার, নারীদের শিক্ষা ও কর্মজীবন থেকে নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি।

গ্লোবাল রিফিউজি সংস্থার প্রেসিডেন্ট ক্রিশ ও’মারা ভিগনারাজাহ এই পদক্ষেপকে “নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসঘাতকতা” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, টিপিএস বাতিল হলে আফগান নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং সেখানে তাদের নির্যাতনের ঝুঁকি রয়েছে।

তিনি বলেন,

“আফগানিস্তান এখনো তালেবান শাসনের যন্ত্রণা, অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও মানবিক সংকটে ভুগছে। এই বাস্তবতা একটুও বদলায়নি।”

— ক্রিশ ও’মারা ভিগনারাজাহ, গ্লোবাল রিফিউজি সংস্থার প্রেসিডেন্ট

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ৮২,০০০-এর বেশি আফগানকে সরিয়ে এনেছিল, তাদের অনেককেই স্থায়ী আশ্রয়ের বদলে ‘প্যারোল’ নামে সাময়িক ভিসা দেওয়া হয়। টিপিএস বাতিল হলে এইসব আফগানদের একটি বড় অংশের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাদের টিপিএস মে মাসে শেষ হবে।

যুদ্ধকালীন সময়ে মার্কিন বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করা আফগানদের জন্য আরো স্থায়ী আইনি সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন মার্কিন সেনা সদস্য ও দুই দলীয় রাজনীতিকরাও।

এই সিদ্ধান্ত মার্কিন অভিবাসন নীতিতে আরও কঠোরতার ইঙ্গিত দেয়, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন ‘আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা’ নাম দিয়ে বহু মানবিক আশ্রয় ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিচ্ছে।

এটি প্রথম নয়—ট্রাম্প ২০১৭-২০২১ মেয়াদে বহু টিপিএস বাতিলের চেষ্টা করেছিলেন, যা আদালতে আটকে গিয়েছিল। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি আবারও একই পথে হাঁটছেন।

এখন দেখা যাচ্ছে, আফগানদের মতো অতিবিপন্ন জনগোষ্ঠীকেও আর আইনি সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে না, যা অভিবাসন নীতির মানবিক দিক নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT