রাজধানী মিরপুরের বাসিন্দা মো. শিবলু একটি ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য অর্ডার করে প্রতারণার শিকার হন। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তিনি জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন, যা এখনো নিষ্পন্ন হয়নি।
গত তিন বছরে ভোক্তা অধিদপ্তরে ই-কমার্স সংক্রান্ত ৬৩ হাজারেরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ছয় হাজার, অর্থাৎ ৯১ শতাংশ অভিযোগ এখনো নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। ইভ্যালি ডটকমের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি—মোট ৩৫,৮৮৩টি।
পরিসংখ্যান ও অভিযোগের ধরন
ভোক্তা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ৬৩,৩৮০টি ই-কমার্স অভিযোগ জমা পড়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৫,৯১৯টি, এবং ৫৭,৪৬১টি অভিযোগ এখনো বাকি।
অধিদপ্তরের অভিযোগের তালিকায় ই-কমার্স খাত শীর্ষে রয়েছে। অভিযোগগুলো মূলত নির্ধারিত সময়ে পণ্য না পাওয়া, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, মানহীন সেবা এবং প্রতিশ্রুত সেবা প্রদান না করা ইত্যাদি নিয়ে। ই-কমার্সের পর দোকানপাট, বাজার, এবং টেলিযোগাযোগ সেবার অভিযোগও উল্লেখযোগ্য।
কারণ ও সমস্যার ব্যাখ্যা
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আখতার খান জানিয়েছেন, বেশিরভাগ অভিযোগ অর্থসংক্রান্ত, যা অধিদপ্তরের এখতিয়ারে পড়ে না। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশ দিয়েছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো পেমেন্ট গেটওয়ে চালু করলে অধিদপ্তর সহায়তা করবে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ফেরত দিচ্ছে না, এবং অর্থসংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তির ক্ষমতাও অধিদপ্তরের নেই।
অভিযোগের তালিকা
ভোক্তাদের পক্ষ থেকে ২৯টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে:
ইভ্যালি ডটকম: ৩৫,৮৮৩ অভিযোগ
ই-অরেঞ্জ ডটকম: ৮,০১০ অভিযোগ
কিউকম ডটকম: ৬,৫১৩ অভিযোগ
আলেশামার্ট ডটকম: ৬,০৭৬ অভিযোগ
দালাল প্লাস ডটকম: ১,৪২০ অভিযোগ
আলাদিনের প্রদীপ ডটকম: ১,৩৯৯ অভিযোগ
সিরাজগঞ্জশপ ডটকম: ১,০৩২ অভিযোগ
সম্প্রতি গৃহীত পদক্ষেপ
গত ১৪ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল থেকে ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান, গ্রাহক, এবং বিক্রেতাদের পাওনা অর্থের পূর্ণাঙ্গ তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে, গ্রাহকদের পরামর্শ দেয়া হয়, যারা অর্থ পরিশোধ করেও পণ্য পাননি বা বিক্রেতারা বিক্রয়মূল্য বুঝে পাননি, তারা জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের অনলাইন পোর্টালে অভিযোগ জমা দিন।
সূত্র: বণিক বার্তা
Leave a Reply