পশ্চিম তীর দখলের ডাক ইসরায়েলের: তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের তীব্র নিন্দা - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন আন্দ্রে রাসেল ইসির ওয়েবসাইটে আবারও ফিরল আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীক ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে পুড়ে ছাই হচ্ছে ২৭ হাজার শিশুর খাবার রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কেঁপে উঠল ইউক্রেন, পাল্টা হামলা চালালো কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ৭.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু বৃষ্টিতে ভেজা এবং হাঁচি-কাশি-জ্বর মাদ্রিদে মুসলিমদের জন্য ১৫,০০০ বর্গমিটার কবরস্থান অনুমোদন সত্য গোপনে এক ধাপ এগিয়ে ‘প্রথম আলো’ ও ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য )পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা

পশ্চিম তীর দখলের ডাক ইসরায়েলের: তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের তীব্র নিন্দা

ডেইলি সাবাহ
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫
  • ১৮ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তীব্র নিন্দা— যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টার সময় এমন মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও অভিহিত করেছে আঙ্কারা।

বৃহস্পতিবার তুরস্ক এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলি নেতাদের পশ্চিম তীর সংযুক্তির আহ্বান ‘গভীর উদ্বেগজনক’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’। এই আহ্বান আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং দখলদারিত্বকে স্থায়ী করার প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “এই ধরনের বক্তব্য ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন নীতিরই প্রতিফলন, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং বহু বছরের আন্তর্জাতিক সমঝোতার পরিপন্থী।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যখন মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির পথ খুঁজছে, তখন সংযুক্তির মতো উসকানিমূলক দাবি দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের নীতিকে হুমকির মুখে ফেলছে।”

আঙ্কারা বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ ও সেখানে বসবাসকারী জনগণকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের প্রচেষ্টা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।

তুরস্ক পুনরায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়— ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার স্বীকৃতি দেওয়া হোক এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও আস্থা ফিরিয়ে আনা হোক।

এদিকে বুধবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির ১৪ জন মন্ত্রী এক খোলা চিঠিতে সরকারকে পশ্চিম তীরকে অবিলম্বে সংযুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ওই চিঠি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ শেয়ার করেন কট্টরপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ।

চিঠিতে বলা হয়, নেসেটের গ্রীষ্মকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার আগেই (২৭ জুলাইয়ের মধ্যে) জুদিয়া ও সামারিয়া— অর্থাৎ পশ্চিম তীরের ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এই ঘোষণার পর আরব লিগভুক্ত দেশগুলোও ইসরায়েলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার সদস্যদের পক্ষ থেকে পশ্চিম তীর সংযুক্তির আহ্বানকে “আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার সরাসরি হুমকি” আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, “পশ্চিম তীর সংযুক্তির এই দাবি আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির মূলনীতিগুলো লঙ্ঘন করে। এসব নীতিমালায় ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় ইসরায়েল দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড— পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমসহ— অবিলম্বে মুক্ত করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।”

ইসরায়েলি নেতাদের মন্তব্যের বিরুদ্ধে জর্ডান, সৌদি আরব ও মিসরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের বক্তব্যকে “চরম উদ্বেগজনক”“বিপজ্জনক” হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের ওপর সার্বভৌমত্ব আরোপের জন্য ইসরায়েলি দখলদার প্রশাসনের আহ্বান”-কে আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্তগুলোর লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সৌদি মন্ত্রণালয় জানায়, “ফিলিস্তিনি ভূমিতে বসতি সম্প্রসারণের যেকোনো প্রচেষ্টার আমরা ঘোর বিরোধিতা করি এবং আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি।”

মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে পশ্চিম তীর সংযুক্তির দাবি “আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করে জানায়, “এই ধরনের পদক্ষেপ অবৈধ দখলদারিত্বকে আরও দৃঢ় করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

কায়রো আরও জানায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের একটি ন্যায়সঙ্গত ও পূর্ণাঙ্গ সমাধানের পথ— দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক গঠন— ব্যাহত করতে পারে এমন একতরফা যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধে তারা দৃঢ় অবস্থান নেবে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে এবং বহুবার দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান প্রতিষ্ঠার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত ৯৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭,০০০-এর বেশি আহত হয়েছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলকে “অবৈধ” ঘোষণা করে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব ইসরায়েলি বসতি “খালি করার” আহ্বান জানায়।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT