রবিবার, ৮ জুন ২০২৫
লন্ডন সফররত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। একটি চিঠির মাধ্যমে তিনি এই সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়েছেন। সাক্ষাতে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ ঘিরে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে চান বলে জানিয়েছেন টিউলিপ।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিউলিপ সিদ্দিক চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তার দাবি, এসব অভিযোগের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে এবং এখনও পর্যন্ত তার সঙ্গে বা তার আইনজীবীদের সঙ্গে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি ও তার মা অবৈধভাবে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের একটি প্লট পেয়েছেন। যদিও টিউলিপ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ড. ইউনূস ৯ জুন যুক্তরাজ্য সফরে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি রাজা চার্লস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরকালেই ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ চান টিউলিপ।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “লন্ডনে আপনার অবস্থানকালে যদি আমাদের সাক্ষাতের সুযোগ হয়, তাহলে এই বৈঠক ঢাকার দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্ভূত ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে সহায়ক হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, “আমি লন্ডনে জন্ম নেওয়া একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং দীর্ঘ এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও, আমি সেখানকার নাগরিক নই, বসবাস করি না এবং সেখানে আমার কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থও নেই।”
চিঠিতে টিউলিপ অভিযোগ করেন, তার আইনজীবীরা লন্ডন থেকে দুদকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। বরং সংস্থাটি ঢাকার একটি অজানা ঠিকানায় নথিপত্র পাঠাচ্ছে এবং তদন্ত সংক্রান্ত তথ্য একের পর এক সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করা হচ্ছে।
টিউলিপ বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পারবেন—এই অভিযোগগুলো কীভাবে আমার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব ও দেশের প্রতি অঙ্গীকারে প্রভাব ফেলছে।”
উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড পর্যালোচনাকারী উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে নির্দোষ বললেও টিউলিপ মন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ান। সে সময় তিনি জানান, বিষয়টি কেয়ার স্টারমারের নতুন সরকারের জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।