কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীর বাবার বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান অভিযুক্তসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ওই নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রোববার (২৯ জুন) ভোরে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি ফজর আলী (৩৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়। সে মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে। একই সঙ্গে ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন—আবদুল হান্নানের ছেলে সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক। তাঁরা সবাই মুরাদনগর উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে উপজেলার বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে। ভুক্তভোগী নারী জানান, স্বামী বিদেশে থাকায় সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন তিনি। সেদিন রাত ১০টার দিকে ফজর আলী তাঁর বাবার বাড়িতে গিয়ে দরজা খুলতে বলে। তিনি অস্বীকৃতি জানালে ফজর আলী দরজা ভেঙে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে।
পাশের বাড়ির এক নারী বলেন, ‘রাতে ওই বাড়িতে চিৎকারের শব্দ শুনে আমরা লোকজন ডাকি। গিয়ে দেখি দরজা ভাঙা। পরে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এসময় কিছু যুবক তাঁকে মারধর ও নগ্ন অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে।’
পরদিন শুক্রবার ভুক্তভোগী নারী মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে ভিডিও ছড়ানো ও নির্যাতনের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। মূল অভিযুক্ত ফজর আলী পালিয়ে ঢাকা চলে যায়। রোববার ভোরে সায়েদাবাদ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, শনিবার রাতে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ১০-১২ জন যুবক ওই নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর করছে। এসময় ওই নারী বারবার প্রাণভিক্ষা চাইলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ধর্ষণ মামলার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পৃথকভাবে আইসিটি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কুমিল্লা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান জানান, প্রধান আসামি ফজর আলীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভিডিও ছড়ানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।