ইয়েমেনের রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হজযাত্রী বহনকারী যাত্রীবাহী বিমানে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার (২৮ মে) ভোরে চালানো এই হামলায় বিমানবন্দরের রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা ইয়েমেনিয়া এয়ারলাইন্সের একাধিক হজ ফ্লাইট সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
হুতি নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল ‘আল মাসিরা’ জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী সানা বিমানবন্দরে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত থাকা বেসামরিক বিমানগুলো একেবারে বিধ্বস্ত হয়। এতে চলতি বছর হজে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার ইয়েমেনি নাগরিক চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
বিমানবন্দরের মহাপরিচালক খালেদ আল সাইফ এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জানান, “ইসরায়েলি হামলায় হজ ফ্লাইটগুলো একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি শুধু অবকাঠামোগত ক্ষতি নয়, বরং আমাদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট প্রমাণ।”
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট দাবি করেন, “আমরা হুতিদের অবস্থানে নির্ভুল হামলা চালিয়েছি এবং শেষ বিমানটিও ধ্বংস করে দিয়েছি।” এ ছাড়া, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা ইসরায়েলের ক্ষতি করবে, তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে।”
এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হুতিদের শীর্ষনেতা আব্দুল মালিক আল হুতি বলেন, “বিমান হামলা চালিয়ে আমাদের হজযাত্রীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটি ইসরায়েলি আগ্রাসনের নতুন নজির হলেও, আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের প্রতি সমর্থন কখনো থামবে না। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় শত্রুর এ ষড়যন্ত্রও ব্যর্থ হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু ধর্মীয় দিক থেকে নয় — এই হামলার ফলে হুতিদের বড় অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। কারণ, হজ প্রস্তুতির পুরো প্রক্রিয়া ভেঙে পড়ায় বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ইয়েমেনের একাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে সানা বিমানবন্দরে এই হামলা সবচেয়ে ভয়াবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।