সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদা আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শনিবার সকাল ৯টায় রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনদের বরাতে জানা গেছে, বাসায় অসুস্থবোধ করলে তাঁকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর শ্যালক আশফাক কাদেরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এটিএম শামসুল হুদার মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফেরার পর জানাজা ও দাফনের আয়োজন করা হবে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। জানাজা শেষে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
১৯৪২ সালে ফরিদপুর সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করা এই বরেণ্য প্রশাসক ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
চাকরি জীবনে তিনি বাগেরহাটে মহকুমা প্রশাসক (এসডিও), পানিসম্পদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০০ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন।
এরপর ২০০৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এটিএম শামসুল হুদা। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এটিএম শামসুল হুদার মৃত্যুতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে এক শোকবার্তায় তাঁকে স্মরণ করে জানানো হয়, তিনি দেশ ও জাতির জন্য এক নিষ্ঠাবান ও দক্ষ প্রশাসক ছিলেন।
স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে বিদায় নিয়েছেন এই প্রশাসনিক অভিভাবক। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।