মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ। ১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জে কর বাবদ কাটা যাবে ৫৬ টাকারও বেশি। মোবাইল সেবার ওপর অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শিগগিরই এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
বর্তমানে মোবাইল ফোন সেবায় ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত রয়েছে। সরকার এই শুল্ক বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, মোবাইল সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ে অনুমোদিত হয়েছে।
৫৬ টাকার করের হিসাব
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী, বর্তমানে মোবাইলে ১০০ টাকার রিচার্জ করলে গ্রাহকদেরকে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ দিতে হয় ২৮ টাকা ১০ পয়সা। রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স দিতে হয় ৬ টাকা ১০ পয়সা, আর পরোক্ষ কর দিতে হয় আরও ২০ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ, গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে কর বাবদ তার থেকে কাটা পড়ে ৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।
যদি শুল্ক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়, তাহলে ১০০ টাকার রিচার্জে গ্রাহকের কর দাঁড়াবে ৫৬.৩ টাকা।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি ও কল সেবার মান খুবই নিম্নমানের। অথচ করের হার সবচেয়ে বেশি। এই নতুন শুল্ক আরোপ দেশের নাগরিকদের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা গ্রহণে নিরুৎসাহিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে। উচ্চ হারে কর আরোপের ফলে ডিজিটাল সেবার প্রতি আগ্রহ কমবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাধা সৃষ্টি হবে।”
এই নতুন শুল্ক আরোপের প্রস্তাব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। নাগরিকেরা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, মোবাইল সেবার মান উন্নত করার পাশাপাশি করের বোঝা হ্রাস করতে।
প্রতিনিয়ত ডিজিটাল সেবা গ্রহণে নির্ভরশীল হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে মোবাইল সেবায় করের হার বাড়ানো সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Leave a Reply